সিলেটের ওসমানী নগরে সরকারি জায়গায় ইটের প্রাচীর তোলে তিনটি পরিবারের নারী-পুরুষ-শিশু ও বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের অবরুদ্ধ করার পায়তারা চলছে। ওইসব পরিবারের সদস্য সংখ্যা পঞ্চাশের উপরে।
চিরতরে ওদের চলাচলের পথ বন্ধ করার উদ্দেশ্যে ইতিমধ্যে স্থাপন করা হয়েছে দেয়ালের ভিত্তি। আপত্তি তুলে মিছে মামলায় আসামি হয়েছেন ভুক্তভোগীরা। এ ঘটনায় সিলেটের পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত জানিয়েছেন তারা। ঘটনাটি ঘটেছে জেলার ওসমানী নগর উপজেলার রাউৎখাই গ্রামে।
জানা গেছে, রাউৎখাই গ্রামের বুড়ি নদীর পাশে নিজেদের জায়গায় দীর্ঘ পঞ্চাশ বছর ধরে বসবাস করছেন মৃত তোয়াব উল্লার ছেলে ধন মিয়া, লাল মিয়া ও প্রতিবেশী মৃত তৈয়ব আলীর ছেলে রৌপ মিয়ার পরিবার। চলাচলের একমাত্র পথ নদী পাড়ের সরকারি জায়গা দিয়েই দিয়েই চলাচল করেন তারা। বাড়ি সংলগ্ন তাদের জমি রাস্তা দেয়ার শর্তে কিনে নেন গ্রামের মৃত জফর আলীর ছেলে প্রভাবশালী আবদুল হান্নান। পরে রাস্তা না দিয়ে বিশাল এরিয়া জুড়ে তাদের বাড়ি-ঘরের আলো-বাতাস বন্ধ করে দিয়ে তিনি দশ ফুট পরিমাণ উঁচু সীমানা প্রচীর নির্মাণ করেন। এক পর্যায়ে নদী পাড়ের পথটিও বন্ধ করে দিতে সরকারি গাছ কেটে নির্মাণ করেন প্রাচীরের ভিত্তি।
এসময় অসহায় পরিবারের সদস্যরা আপত্তি তোললে তিনি ধন মিয়াকে প্রাণে হত্যার হুমকি দেন। ওই রাতেই ওসমানী নগর থানায় তাদের বিরুদ্ধে দেয়া হয় মিথ্যে অভিযোগ।
সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, নদী পাড়ের বিশাল জায়গা নিয়ে ইটের প্রাচীর নির্মাণ করা হয়েছে। বাড়ি ঘেঁসে তোলা প্রাচীর ভুক্তভোগী পরিবারের ঘরের সমান উঁচু। নিজের নির্ধারিত জমির অংশের বাহিরে সরকারি জায়গায় দেয়াল তোলার উদ্দেশ্যে নির্মাণ করা হয়েছে প্রাচীরের ভিত্তি। পুরো সরকারি জায়গা দখল নিতে কাটা হয়েছে একাধিক গাছ। পথ বন্ধে গ্রহণ করা হয়েছে সকল প্রক্রিয়া।
ধন মিয়া জানান, শর্তানুযায়ী আমাদের রাস্তা না দিয়ে এখন একমাত্র চলাচলের পথটিও বন্ধ করার চেষ্টা করছেন আবদুল হান্নান। প্রতিবাদ করার হয়রানি করা হচ্ছে আমাদের। আমাকে দেয়া হয়েছে হত্যার হুমকি। কেউ মারা গেলে লাশটি যেন বাহিরে নিতে পারি, সে অনুরোধ করেও কোন লাভ হয়নি। এখন আমরা কোথায় যাব? তিনি আমাদেরকে বিদ্যুৎ সংযোগও নিতে দেননি দীর্ঘদিন।
এ বিষয়ে কথা হলে অভিযুক্ত আবদুল হান্নান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ওদের সাথে রাস্তা দেয়ার কোন শর্ত ছিলনা। সরকারি জায়গা আমি একা নয়, ওখানে আরো অনেকে দখল করে আছে। সবাই ছেড়ে দিলে, আমিও ছাড়বো।
স্থানীয় ইউপি সদস্য (সাবেক) সেলিম আহমদ বিষয়টি অমানবিক উল্লেখ করে বলেন, আমরা গ্রামবাসী সকলেই অনুরোধ করেছি। আবদুল হান্নান কর্ণপাত করেননি। অন্যায় ভাবে তিনটি অসহায় পরিবারকে তিনি গৃহবন্ধী করার চেষ্টা করছেন। নিজের জায়গা দিয়ে রাস্তা না-ই বা দিলেন, মানবিক দৃষ্টিতে সরকারি চলাচলের পথটুকু ওদের জন্যে ছেড়ে দেয়া উচিত।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার