এক যুগেরও বেশি সময় ধরে নদীর বুকে দাঁড়িয়ে আছে সেতু। নেই দু’ধারে রাস্তার কোন চিহ্ন। নির্মাণের পর কোন কাজেই আসেনি এটি। একদিনের জন্যেও ব্যবহার হয়নি সেতুটি। গাড়ি পারাপার দূরে থাক, পায়ে হেঁটে সেতু দেখতে গেলও অনেকটা দুর্গম পথ মাড়াতে হয়। কোনোভাবেই এ সেতু পার হওয়া সম্ভবপর না হওয়ায় এলাকাবাসি এর নাম দিয়েছেন ‘ভূতের পুল’। সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের হালঘাটা এলাকায় মাটিজুরা নদীতে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছে এটি।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মাটিজুরা নদী’র শেষ প্রান্তে নদীর উভয় কূল থেকে প্রায় ১০ ফুট রেখে ঠিক মধ্যখানে চার খাম্বা উপর নির্মিত আনুমানিক ১৫ ফুট উচ্চতায় সেতুটি দাঁড়িয়ে আছে। দীর্ঘদিন ব্যবহার না হওয়ায় সেতুতে গজিয়েছে গাছ-গাছালি। এর কোন পাশেই নেই রাস্তা। এক পাশে ফসলি জমি ও অন্য পাশে ঝোপঝাঁড়। সেতু নির্মাণের পর কখনই রাস্তা করার কোন উদ্যোগ নেয়নি কেউ।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, ২০০১ সালে এটি নির্মাণ করা হয়। এর উদ্দেশ্য ছিল দু’পাশে সড়ক তৈরী করে খালিটেকা ও মীরের গাঁও গ্রামের মধ্যে সংযোগ স্থাপন। কিন্তু সেতু নির্মাণের পর অদৃশ্য কারণে সড়ক হয়নি আর। গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, যে পরিকল্পনায় সেতু নির্মাণ করা হয়েছে, সে অনুযায়ী রাস্তা তৈরী হলে সেতুটি কাজে লাগবে। চলাচল সহজ হবে দুই গ্রামের মানুষের। তারা আরো জানান, সেতুটির অদূরেই এরকম আরো দুটি ‘ভূতের পুল’ রয়েছে। দেখতে যাওয়া হয় ওই দু’টিও। দেখা যায়, ওই দু’টির সাথে সড়ক সংযোগ থাকলেও দু’পাশে মাটি নেই। মূল সড়ক থেকে প্রায় ১০ ফুট উচ্চতায় দাঁড়িয়ে আছে মৌলভীর গাঁও ও খালিটেকা গ্রামের সংযোগ সেতু ও উজাইজুড়ি গ্রামের সেতু। প্রতিদিন ওই দুই সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করেন চানপুর, খালিটেকা, মীরেরগাঁও ও জগদিশপুর গ্রামের মানুষ।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আবদুল মজিন জানান, ২০০১ সালে এটি নির্মাণ করা হয়। পরে সড়ক না হওয়ায় ঝুলে থাকে এই সেতু। অন্যদু’টি সেতুমুখে মাটি ভরাট না হওয়ায় চলাচলে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে কথা হলে বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বর্ণালী পাল ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’কে বলেন, বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। সেতুগুলোর ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা