উচ্ছেদের এগারো মাসের মাথায় আবার দখল হয়ে গেছে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে শহরের ভানুগাছ সড়কে রেলওয়ের ২.৮৭ একর জমি। পুরানো দখলদাররাই নতুন করে ওই জমিতে গড়ে তুলছেন পাকা দোকানঘর। এসব ঘরে খুলে বসেছেন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ৩২ বছর বেদখলে থাকা রেলের এই জমি ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে উদ্ধার করে রেলওয়ের এষ্টেট বিভাগ। সে সময় ওই জমিতে অবৈধ ভাবে গড়ে উঠা প্রায় তিন শতাধিক অবৈধ স্থাপনা ভেঙে ফেলা হয়েছিল।
তবে উচ্ছেদের এক মাস পর দখলদাররা তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যানার লাগিয়ে নিজ নিজ জায়গা দখল করে রাখেন। এর কয়েক মাস পর শুরু করেন পাকা ঘর নির্মাণ। বর্তমানে এই জমিতে আবারও প্রায় ত্রিশটি দোকান ঘর তৈরী করা হয়েছে। আরো ঘর তৈরীর জন্য এনে রাখা হয়েছে ইট, বালু। অনেক পুরনো ঘড়ের ভাঙ্গা অংশ নতুন করে সংস্কার করে ব্যবহার উপযোগী করা হচ্ছে।
নিউ হাতিম ফরেন ফার্নিচার’র মালিক মো. লোকমান হোসেন বলেন, জমির মালিক আদালতে স্বত্ব মামলা করেছেন। আমরা ভাড়াটিয়ারা আবার ঘর বানিয়ে ব্যবসা করছি।
জানা যায়, ১৯৮৩ সাল থেকেই বিভিন্ন ব্যক্তি বিশেষ রেলওয়ের এই জমি দখলে নিয়ে নিজেদের স্বত্ব দাবি করে মৌলভীবাজারের সাব জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন। নিন্ম আদালত থেকে শুরু করে সুপ্রিম কোর্টের অ্যাপিলেট ডিভিশন পর্যন্ত প্রতিটি মামলার রায়ই বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষে হয়েছে। সর্বশেষ ২০১৫ সালের ২৯ জুন প্রধান বিচারপতির সমন্নয়ে গঠিত চার সদস্যের সুপ্রিম কোর্টের অ্যাপিলেট বেঞ্চ দখলদারদের আবেদন খারিজ করে রেলওয়ের পক্ষে রায় দেন। আবেদন খারিজের পর পরই ২০১৬ সালে মুক্তিযোদ্ধা কৃষি ও নার্সারি প্রকল্পের সাইন বোর্ড টাঙ্গিয়ে স্থানীয় ৩০ জন মুক্তিযোদ্ধা নতুন করে ওই জমি দখল করেছিল।
ওই জমির উপর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্বপ্নলোকের মালিক মো. রুকনুজ্জামান বলেন, আগে কারা মামলা করেছিল সেটা আমাদের জানা নেই। আমরা জানি এই জমি রেলের নয়, ব্যক্তি মালিকানা। জমির পারদ ও দলিল দিয়ে আমরা ২০১৭ সালে আদালতে একটি স্বত্ব মামলা করেছি। আদালত জমির উপর ইঞ্জাংশন জারি করেছেন।
রেলওয়ের বিভাগীয় এ্যাষ্টেট অফিসের ভারপ্রাপ্ত আমিন মো. গিয়াস উদ্দিন জানান, নতুন করে দখলের বিষয়টি তাদের নজরে এসেছে। আবার উচ্ছেদের পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে।
রেলওয়ের বিভাগীয় এস্টেট অফিসার ঢাকা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘দখলদারদা নতুন করে একটি মামলা করেছে। আমরা খুব তাড়াতাড়ি মামলা শেষ করে উচ্ছেদ করতে আসবো।’
বিডি প্রতিদিন/হিমেল