সিলেটে আগামী শনিবার (৫ ডিসেম্বর) থেকে অ্যান্টিজেন পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত করা হবে মানবশরীরের করোনাভাইরাস। এদিন থেকে সিলেটের শহীদ ডা. শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে এ পরীক্ষা পদ্ধতি শুরু হবে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, অ্যান্টিজেন টেস্টে সময় প্রয়োজন হবে মাত্র ১৫ মিনিট এবং খরচও হবে অনেক কম। এ ছাড়া অ্যান্টিজেন টেস্ট সিলেটে ব্যাপক হারে করোনা সংক্রমণরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

করোনা শনাক্তের জন্য দেশে এতদিন শুধু রিভার্স ট্রান্সক্রিপশন পলিমারেজ চেইন রিঅ্যাকশন (আরটি-পিসিআর) পদ্ধতিতে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করার অনুমতি ছিল। তবে এখন সরকার সিলেটসহ দেশের ১০ জেলায় অ্যান্টিজেন পরীক্ষার অনুমতি দিয়েছে। এ পরীক্ষা শুধু সরকারি পর্যায়ে সীমাবদ্ধ থাকবে।

অ্যান্টিজেন টেস্ট কী?

মানবশরীর থেকে রক্ত নিয়ে তা থেকে প্লাজমা আলাদা করে একটি কিটের মাধ্যমে ভাইরাস শনাক্ত করার প্রক্রিয়াকে বলা হয় অ্যান্টিজেন টেস্ট। আরটিপিসিআর টেস্টে শুধু সোয়াব দিয়ে করোনা শনাক্ত করা হতো এতদিন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভাইরাস শরীরে থাকা মানেই শরীরে অ্যান্টিজেন থাকবে। ভাইরাস শরীরে প্রবেশের পর যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, সেটাও শরীরে থাকে। রোগীর রক্ত পরীক্ষা করলে বোঝা যায় যে অ্যান্টিজেন এবং অ্যান্টিবডিই দুটি আছে কি না। সহজ করে বলতে গেলে অ্যান্টিজেনটা হচ্ছে ভাইরাস, আর অ্যান্টিবডি হচ্ছে ভাইরাস থেকে সুরক্ষা দেওয়ার একটা উপাদান। কারও মধ্যে ভাইরাসটি অবস্থান করলে অ্যান্টিজেন টেস্ট পজিটিভ আসবে। অ্যান্টিজেন থাকা মানে তিনি ভাইরাসে আক্রান্ত।

টেস্টের বিষয়ে তারা বলছেন, শরীর থেকে রক্ত নিয়ে অ্যান্টিজেন টেস্ট করা হয়। রক্ত থেকে প্লাজমা আলাদা করা হয়, সেই রক্তরস দিয়ে মূলত পরীক্ষাটি করা হয়। আরটি পিসিআর পরীক্ষার ক্ষেত্রে সোয়াব টেস্ট করা হয়, কিন্তু অ্যান্টিজেন পরীক্ষা শুধু রক্ত থেকেই হয়।

অ্যান্টিজেন টেস্টের সুবিধা প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অ্যান্টিজেন টেস্টে ধরা যায় শরীরে করোনাভাইরাস আছে কী নেই। পিসিআর পরীক্ষাতেও তাই জানা যায়, কিন্তু তাতে একটু সময় বেশি লাগে। অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় কোনো মেশিনের প্রয়োজন নেই, শুধু কিট দিয়ে দ্রুত সময়ে নির্ণয় সম্ভব। আর অ্যান্টিজেন পরীক্ষা মূল্য সাশ্রয়ী। ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে অ্যান্টিজেন পরীক্ষার ফল পাওয়া সম্ভব।

এ ছাড়া ব্যাপক হারে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত এবং করোনার সংক্রমণ রোধে অ্যান্টিজেন টেস্ট ভালো ভূমিকা রাখতে পারবে।

তাছাড়া হাসপাতালগুলোতে রোগীদের ভোগান্তি কমবে এবং চিকিৎসকসহ অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের আক্রান্ত হবার হার কমে যাবে।

বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ