দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার ও গুনধুম রেললাইন প্রকল্পের আওতায় ভূমি অধিগ্রহণের প্রায় ২২০ একর ভূমি অধিগ্রহণ করে রেলওয়েকে হস্তান্তর করেছে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসন।
এর মধ্যে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন দিয়েছে ১০.১৭২৫ একর এবং কক্সবাজার সদর দিয়েছে ২১০.৪২৬০ একর। মোট ২২০.৫৯৮৫ একর ভূমি অধিগ্রহণ করে রেলওয়েকে হস্তান্তর করেছে। এর মধ্যে বাকি ভূমিগুলো কিভাবে দ্রুত অধিগ্রহণ করা যায় সে বিষয়েও চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সাথে আলোচনা হয়েছে।
সর্বশেষ ৮ জানুয়ারী ২০১৮ সালে এ ভূমি হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে রেললাইনের জন্য ভূূমি অধিগ্রহণের পাশাপাশি এ প্রকল্পের নানাবিধ কাজগুলো দ্রুত শেষ করতে রেলওয়ে প্রশাসন নানাভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রাধিকার প্রকল্পের মধ্যে অন্যতম প্রকল্প বলেও জানান রেলওয়ে কর্মকর্তারা।
রবিবার ও সোমবার রেলওয়ে মহাপরিচালক (ডিজি) আমজাদ হোসেন এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের দায়িত্বশীলদের সাথে এ প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অগ্রাধিকার দিয়ে প্রকল্পের কাজটি কিভাবে আরো গতি বাড়ানো যায় সেসব বিষয়সহ প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে। তাছাড়া কক্সবাজারে নির্মাণাধীন রেল স্টেশন ও আইকনিক রেলওয়ে স্টেশন বিল্ডিং এর সাইট পরির্দশন, দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার রেললাইন, প্রস্তাবিত রেলওয়ে জংশনের সাইট পরির্দশন করেন ডিজি ও প্রকল্প পরিচালক মফিজুর রহমানসহ কর্মকর্তারা।
রেলওয়ের মহাপরিচালক (ডিজি) প্রকৌশলী মো. আমজাদ হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দোহাজারি হতে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু হতে মায়ানমারের নিকটে গুনদুম পর্যন্ত সিংগেল লাইন ডুয়েলগেজ ট্র্যাক নির্মাণ প্রকল্পের বাস্তবায়নের কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সদরের প্রায় ২২০.৫৯৮৫ একর ভূমি অধিগ্রহণ করে রেলওয়েকে হস্তান্তর করেছে জেলা প্রশাসন। ভূমি অধিগ্রহণ আরো ত্বরান্বিত কিভাবে করা যায় সে বিষয়ে জেলা প্রশাসনের দায়িত্বশীলদের সাথেও আলোচনা হয়েছে।
প্রকল্প পরিচালক (পিডি) মো. মফিজুর রহমান বলেন, দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার ও ঘুমধুম রেললাইন প্রকল্পের আওতায় এ কাজ শেষ হবে ২০২২ সালের মধ্যে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-ঘুনধুম রেললাইন স্থাপিত হলে যোগাযোগসহ দেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনার নতুন দ্বারও খুলবে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে পর্যটন শহর কক্সবাজার রেল নেটওর্য়াকের আওতায় আসবে।
রেলওয়ে সূত্র জানা যায়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পর্যটক আকর্ষণ করার জন্যই সেখানে আইকনিক ইন্টারন্যাশনাল রেলওয়ে স্টেশন নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ঝিনুক আকৃতির এ স্টেশন দেখলেই বোঝা যাবে এটি সমুদ্র সৈকতের স্টেশন। স্টেশনটির অবস্থান হবে কক্সবাজার বাস টার্মিনালের বিপরীতে চৌধুরীপাড়ায়। তবে এ প্রকল্পটি হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৮টি অগ্রাধিকার প্রকল্পের একটি। তাই এ প্রকল্পটির দ্রুত বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এর আগে ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার এবং রামু-ঘুনধুম পর্যন্ত মিটারগেজ রেলপথ নিমার্ণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, মোট ১২৮ কিলোমিটারের মধ্যে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু পর্যন্ত ৮৮ কিলোমিটার, রামু থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার এবং রামু থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করে বাংলাদেশ রেলওয়ে। বিভিন্ন সময় প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে গিয়ে সর্বশেষ গত বছরের এপ্রিলে প্রকল্প ব্যয় আরও বেড়ে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকায় স্থির হয়।
তাছাড়া শনিবার রেলওয়ের মহাপরিচালক (ডিজি) প্রকৌশলী মো. আমজাদ হোসেন চট্টগ্রামে অবস্থাকালে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. ইলিয়াছ হোসেনের সাথে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ও মতবিনিময় করেছে। সার্কিট হাউজে এ দ্বি-পক্ষীয় বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার ও ঘুমধুম রেললাইন প্রকল্পের (পিডি) মো. মফিজুর রহমান, অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক (এপিডি) আবুল কালাম চৌধুরী, বাংলাদেশ রেলওয়ের পুর্নবাসন উপ-পরিচালক মোহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (ভূমি অধিগ্রহণ) মোমিনুর রশীদ, নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) সৈয়দ মুরাদ আলী।
রেল মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, মোট ১২৮ কিলোমিটারের মধ্যে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু পর্যন্ত ৮৮ কিলোমিটার, রামু থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার এবং রামু থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করে বাংলাদেশ রেলওয়ে। বিভিন্ন সময় প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে গিয়ে সর্বশেষ গত বছরের এপ্রিলে প্রকল্প ব্যয় আরও বেড়ে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকায় স্থির হয়।
বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন