ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল লিমিটেড (আইএইচএল) এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. রবিউল হোসেন বলেছেন, সাধারণত গর্ভধারণের ৩৭ সপ্তাহ আগে কোনো শিশু জন্ম নিলে তাকে অপরিপূর্ণ শিশু বলা হয়। আর নির্দিষ্ট সময়ের আগে জন্ম নিলে মৃত সন্তান প্রসবের আশঙ্কাও থাকে অনেক বেশি। দেশে প্রতিবছর প্রিম্যাচুউর বেবি জন্মের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। প্রিম্যাচুউর বেবি জন্মের ফলে মৃত্যুর সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। শিশুমৃত্যুর ৪৫ শতাংশই ঘটছে শুধু প্রিম্যাচুউর বেবির ক্ষেত্রে। প্রিম্যাচুউর শিশুদের মধ্যে যারা বেঁচে থাকে তারাও পরে নানা অসুখে ভোগে। পুষ্টির সঙ্গে স্বাস্থ্য এবং স্বাস্থ্যের সঙ্গে নিরাপদ মাতৃত্বের একটি নিবিড় সম্পর্ক আছে।’
শনিবার দুপুরে ইম্পেরিয়াল হাসপাতালের উদ্যোগে সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ‘অপরিপূর্ণ শিশু (প্রিম্যাচুউর বেবি), ডেলিভারি, জন্ম এবং ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আলোচনায় অংশ নেন প্রফেসর ডা. তাহের খান, প্রফেসর ডা. বাসনা মূহুরী, প্রফেসর ডা. দিদারুল আলম, প্রফেসর ডা. শাহেনা আক্তার, ডা. ফয়সল আহমদ প্রমুখ। ডা. নিশাত ফাতেমার সঞ্চলনায় সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডা. উম্মুল নুসরাত জাহান, ডা. আব্দুর রাজ্জাক, শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. সাইফুল ইসলাম, ডা. শিরীন ফাতেমা। সেমিনারে ১১৭ জন গাইনি এবং শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ উপস্থিত ছিলেন।
সেমিনারে বলা হয়, দেশের প্রতিটি জেলা তথা নগরীর বিভিন্ন ক্লিনিক থেকে প্রিম্যাচুউর শিশু হাসপাতালে আসছে। যা পুষ্টির অভাব। পুষ্টিশিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ দিক হল- অতি দামি মানেই অতি পুষ্টিযুক্ত খাদ্য নয়। গ্রামাঞ্চলের মহিলাদের ক্ষেত্রে স্থানীয়ভাবে প্রাপ্ত স্বল্পমূল্যের দানাশস্য থেকেই পুষ্টি চাহিদা পূরণ করা যায়। দানাশস্য, শাকসবজি, দুধ, ডিম, চিংড়ি এবং ছোট মাছ থেকেও পর্যাপ্ত পুষ্টি পাওয়া যায়।
বক্তারা বলেন, ‘বায়ুদূষণের ক্ষতিকর প্রভাব অনেক। এই দূষণ গর্ভের শিশুর জন্যও বিপদ ডেকে আনতে পারে। বায়ুদূষণ অপরিপূর্ণ শিশু (প্রিম্যাচুউর বেবি) জন্ম নেওয়ার ঝুঁকি ১৯ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে পারে। বায়ুবাহিত দূষিত বস্তুকণার কারণে অপরিপূর্ণ শিশু জন্ম নেওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি বেড়ে যায়।
অধ্যাপক ডা. রবিউল হোসেন বলেন, ইম্পেরিয়াল হাসপালে আছে, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ (ইনফেকশান কন্ট্রোল), রোগী ও কর্মীদের নিরাপত্তা এই তিনটি বিষয়কে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। এছাড়া কার্ডিয়াক, ট্রান্সপ্ল্যান্ট, নিউরো, অর্থোপেডিক ও গাইনি অবস্সহ ১৪টি মডিউলার অপারেশান থিয়েটার, ৬টি নার্স স্টেশন ও ৬২টি কনস্যালটেন্ট রুম সম্বলিত বহির্বিভাগ এবং আধুনিক গুণগত মানসম্পন্ন ৫৮টি ক্রিটিকাল কেয়ার বেড; নবজাতকদের জন্য ৪৪ শয্যা বিশিষ্ট নিওনেটাল ইউনিট এবং ৮টি পেডিয়াট্রিক আইসিইউ স্থাপন করা হয়েছে। বিত্তমান, মধ্যবিত্ত ও অস্বচ্ছল থেকে শুরু করে সব ধরণের রোগীরা চিকিৎসা সেবার সুযোগ পাবে।’
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার