চসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে ‘বিদ্রোহী’ বা স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন কাউন্সিলর প্রার্থীরা। এসব প্রার্থীদের কারণে রীতিমতো আতঙ্কে রয়েছেন দলীয় প্রার্থীরা। অধিকাংশ বিদ্রোহীরা নির্বাচনী মাঠে থাকবেন বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে নিশ্চিত করেছেন। আগামীকাল বৃহস্পতিবার কাউন্সিলর পদে বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিষয়ে দলীয় বৈঠকের ডাক দেয়া হলেও কোন ধরণের সুফল তেমন কোন সুফল আসবে না বলেও জানা গেছে। নির্বাচনী প্রধান সমন্বয়কারি ও দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন।
দলীয় ও স্থানীয় তৃণমূল নেতা-কর্মীদের সূত্রে জানা গেছে, চসিকের নির্বাচনে সংরক্ষিত ও সাধারণ ওয়ার্ডে বর্তমান ১৯ জন কাউন্সিলর দলীয় মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। তারাই এবার বিদ্রোহী হিসেবে নির্বাচনী মাঠেই লড়তে মনোনয়নপত্রও দাখিল করেছেন। এখানে যোগ্য, ত্যাগী এবং ক্লিন ইমেজের বেশ কয়েকজন যোগ্য প্রার্থীও দলের মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন নানা কারণে। অনেকেই বলছেন, মনোনয়ন বঞ্চিত যোগ্য অনেক নেতাই নির্বাচন করলে সাধারণ মানুষের ভোটে নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। সেই কারণে চসিকের নির্বাচনী দলীয় বৈঠকে কাল বৃহস্পতিবার বিদ্রোহীরা উপস্থিত থাকার সম্ভাবনা থাকলেও সিদ্ধান্তে একমত নাও হতে পারে। একাধিক প্রার্থী দলীয় কোন বর্তমান পদে না থাকলেও এলাকায় ব্যাপক গ্রহণযোগ্য। আবার বিদ্রোহীদের মধ্যে বির্তকিত প্রার্থীও রয়েছেন। এসব কারণে দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্তরা ঘরের শত্রুর কারণে নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
অন্যদিকে বিএনপি থেকেও বেশ কয়েকজন বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। তবে মনোনয়ন ফরম জমা দিলেও দলীয় বৈঠকে তারা প্রত্যাহার করতে পারেন বলে বিএনপির নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।
জানা গেছে, দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে কাউন্সিলর পদে প্রার্থীতা বহাল রাখলে সংগঠনের প্রাথমিক সদস্যপদও থাকবে না, এমন হুঁশিয়ারি এসেছে নগর আওয়ামী লীগের এক সভায়। তবে বিদ্রোহী প্রার্থীদের দাবি, মনোনয়নপ্রাপ্ত অনেকেই আছেন নানাভাবেই বির্তকিত। মনোনয়নের বিষয়ে তথ্যগতভাবে ভুল উপস্থাপন করা হয়েছে কেন্দ্রে। কেন্দ্রকে ভুল বুঝিয়ে জনবিচ্ছিন্ন প্রার্থীকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এটি সাধারণ মানুষ মেনে নিচ্ছেন না। তারা নির্বাচন করতে চাপ দিচ্ছেন।
দলীয় ও নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, চসিক নিার্বচনে সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের বর্তমান কাউন্সিলর দলীয় মনোনয়ন না পেয়েও প্রায় ১৯ জন বিদ্রোহী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে কমিশনে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৪ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৫ জন বর্তমান কাউন্সিলর মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, আগামী ২৯ মার্চ চসিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের শেষ তারিখ ছিল ১ মার্চ। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ৮ মার্চ। এছাড়া ৯ মার্চ প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ। ভোটগ্রহণ হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা