বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নামে ভুয়া ওয়েবসাইট খুলে জালিয়াতির মামলায় সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠানের মালিকসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গ্রেফতার পাঁচজন হলেন- সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠান খান এন্টারপ্রাইজের মালিক গোলাম মওলা খান, তার ছোট ভাই গোলাম রসুল খান, জাল ওয়েবসাইট ডেভেলপার আবুল খায়ের পারভেজ, মো. আতিকুর রহমান রাসেল ও রাহাত হায়দার চৌধুরী রানা।
এদের মধ্যে তিনজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। চট্টগ্রাম বন্দরে মিথ্যা ঘোষণায় আমদানি করা পণ্য খালাসের জন্য তারা এই প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছিলেন।
সিআইডির চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিশেষ পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শাহনেওয়াজ খালেদ বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জাল ওয়েবসাইট খুলে জালিয়াতির অভিযোগে গত ২৯ অক্টোবর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বন্দর থানায় মামলা দায়ের হয়। মামলার বাদী হলেন চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের সহকারী শুল্ক কর্মকর্তা সুজয় দেবনাথ। এরপর মামলাটির তদন্তভার দেওয়া হয় আমাদের।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার চকবাজারের মেসার্স সিয়াম এন্টারপ্রাইজের নামে গত ১০ জানুয়ারির ইনভয়েসে ১৩ হাজার ৫২০ কেজি চীনাবাদাম ও ৪ হাজার ৫১০ কেজি অলিভ ঘোষণায় একটি চালান আসে বন্দরে। চালানটি খালাসের জন্য চট্টগ্রামের সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠান খান এন্টারপ্রাইজ কাস্টম হাউসে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করে।
চালানটি সম্পর্কে গোপন সংবাদ থাকায় কাস্টম হাউসের এআইআর শাখা আমদানিকারকের বিল অব এন্ট্রি লক করে। পরে চালানটির শতভাগ কায়িক পরীক্ষায় ২১ হাজার ৬০ কেজি ঘোষণা বহির্ভূত ফরমুলেটেড মিল্ক পাউডার পাওয়া যায়। যা আমদানি নীতি আদেশ ২০১৫-১৮ এর অনুচ্ছেদ ১৭ অনুযায়ী শর্তযুক্ত পণ্য।
ফলে কাস্টম হাউসের কমিশনার আমদানিকারকের ওপর ৬৬ লাখ টাকা ব্যক্তিগত জরিমানা ও ১০ লাখ টাকা বিমোচন জরিমানা আরোপ করেন এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বা আমদানি রফতানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দফতরের সিপি দাখিল সাপেক্ষে চালানটি খালাসের আদেশ দেন।
গত ১১ অক্টোবর আমদানিকারক বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ১টি সিপি ও ১৩ অক্টোবর সিপি বিষয়ক বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আরেকটি চিঠি দাখিল করেন। দুইটি চিঠির মর্মার্থ অনুযায়ী বিএসটিআই’র ছাড়পত্র এবং কমিশনারের বিচারাদেশ অনুযায়ী শুল্ককর ও জরিমানা দেওয়া সাপেক্ষে চালানটি খালাসের সিপি দেওয়া হয়েছে।
চালানটি খালাসে দাখিল করা সিপি এবং অন্যান্য দলিলাদি যাচাইকালে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিপি এর হেডিংয়ে যে ওয়েবসাইটের ঠিকানা (www.mincomgov.com) রয়েছে তাতে দাখিল করা সিপি’র কপিও পাওয়া গেছে। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় সিপিতে স্বাক্ষরকারী উপ-সচিবের সঙ্গে সরাসরি ফোনালাপে জানা যায় দাখিল করা সিপি ভুয়া। ফলে বিষয়টি খতিয়ে দেখার পর সংশ্লিষ্ট আমদানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর