পাঁচটি জাহাজে করে আরও একদফা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দল ভাসানচরে গিয়ে পৌঁছেছে। লাইফ জ্যাকেট পরে এ দফায় প্রায় ১ হাজার ৮০০ রোহিঙ্গা স্বেচ্ছায় ভাসানচরে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ৫টি জাহাজে করে তাদের নিয়ে যাওয়া হয় ভাসানচর। তখন নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, র্যাব, নৌ পুলিশের স্পিড বোটের টহলে কড়া নজরদারি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার ছিল।
এর আগে সোমবার রাতে দুই দফায় ৩০টি বাসে করে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে তাদের চট্টগ্রাম আনা হয়। পতেঙ্গার বিএফ শাহীন কলেজ মাঠের ট্রানজিট পয়েন্টে তাদের রাখা হয়। সোমবার দুপুরে কক্সবাজারের উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠ থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে রোহিঙ্গাদের বহনকারী ৩০টি বাস দুই ধাপে চট্টগ্রাম আসে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (বন্দর) অলক বিশ্বাস জানান, কক্সবাজার থেকে দুই দফায় ১ হাজার ৮০০ জন রোহিঙ্গা চট্টগ্রামে এসে পৌঁছেছেন। মঙ্গলবার সকালে পতেঙ্গা বোট ক্লাব থেকে তাদের নিয়ে ভাসানচরের উদ্দেশ্যে জাহাজ ছেড়ে যায়। ৪৫ মিনিট থেকে এক ঘণ্টার ব্যবধানে রোহিঙ্গাদের নিয়ে জাহাজগুলো ভাসান চরে পৌঁছে।
এদিকে গত ৪ ডিসেম্বর ১ হাজার ৬৮৫ জন রোহিঙ্গাকে নোয়াখালী সংলগ্ন দ্বীপ ভাসানচরে নেওয়া হয়। প্রথম দল পাঠানোর ২৪ দিন পর মঙ্গলবার দ্বিতীয় দলকে পাঠানো হয় ভাসানচরে। ভাসানচরে রোহিঙ্গা স্থানান্তরের জন্য নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করে সরকার। সেখানে এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়।
যেখানে রয়েছে- শিশুদের খেলার মাঠ, স্কুল, চিকিৎসা কেন্দ্র, দ্বীপে কর্মরত দেশি-বিদেশি সংস্থার লোকজনের জন্য থাকার আলাদা ভবনসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা। এ ছাড়া ঝর-জলোচ্ছ্বাস থেকে সেখানকার ৪০ বর্গকিলোমিটার এলাকা রক্ষা করতে ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ১৯ ফুট উঁচু বাঁধ এবং জাতিসংঘের প্রতিনিধিদের জন্য ভবন ও জেটি নির্মাণ করা হয়েছে ভাসানচরে।
প্রসঙ্গত, মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর লাখ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। নতুন পুরনো মিলে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা এখন বসবাস করছেন কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা শিবিরে। সেখান থেকে এক লাখ রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তরের উদ্যোগ নেয় সরকার। এ কাজের পুরো তত্ত্বাবধানে রয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর