চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম মারা যান ৬৯ বছর বয়সী এক বয়োবৃদ্ধ। গত বছরের ৯ এপ্রিল মারা যাওয়া এ বৃদ্ধের বাড়ি সাতকানিয়ায়। এর পর গত ১৬ মাসে চট্টগ্রাম মহানগর ও উপজেলায় ৫১ থেকে ৬১ বছরের উর্ধ্ব বয়সী মানুষ মারা গেছেন ৮৩৪ জন। অথচ এই সময়ের মধ্যে চট্টগ্রামে এক থেকে ৫০ বছর বয়সী মানুষ মারা গেছেন মোট ২২৫ জন।
তবে পরিবারের এমন বয়স্করা মারা যাওয়ায় বিপাকে পড়ে পুরো পরিবার। বয়স্কদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন আবার পরিবারের একমাত্র উপর্জনক্ষম ব্যক্তি। ফলে অনেক পরিবারে অসময়ে নেমে আসে দুঃখের ছায়া।
জানা যায়, চট্টগ্রামে ৬১ এর উর্ধ্ব বয়সী মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে মোট ১২ হাজার ৬৩১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৭ হাজার ৯০৪ জন এবং মহিলা ৪ হাজার ৭২৭ জন। অন্যদিকে, ৩০ বছরের পর অনেকেই উচ্চরক্তচাপ ও ডায়াবেটিসসহ নানা রোগে ভুগছেন। আবার অনেকে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছেন অপেক্ষাকৃত কম বয়সে।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, করোনায় অনেক পরিবারের বয়োবৃদ্ধরা মারা গেছেন। এটি দুঃখের। পরিবারের তরুণদের কারণেই বৃদ্ধরা আক্রান্ত হচ্ছেন। কারণ তারা তো বাসা থেকে কমই বের হন। তবে অনেক ক্ষেত্রে বয়োবৃদ্ধের নানা জটিল রোগের কারণেও মৃত্যু হয়েছে। তাই পরিবারের বৃদ্ধ সদস্যদের সাবধানে রাখা জরুরি।
জেনারেল হাসপাতালের কনসালটেন্ট (মেডিসিন) ডা. এইচএম হামিদুল্লাহ মেহেদী বলেন, করোনায় অপেক্ষাকৃত বয়োবৃদ্ধরা ঝুঁকিতে থাকেন। কারণ এদের অনেকের মধ্যেই একাধিক জটিল রোগ থাকে। এর মধ্যে আছে- ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ক্যান্সার, ব্রঙ্কিওল অ্যাজমা, কিডনি সমস্যা, হৃদরোগ। তাছাড়া অনেকের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেছে। তাই বয়স্ক মানুষরা বেশি মারা যাচ্ছেন। এ কারণে বয়স্কদের প্রতি গুরুত্ব দেয়া উচিত। কোনো সমস্যা দেখা গেলেই চিকিৎসা দিতে হবে।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামে বুধবার ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১২ জন এবং নতুন করে শনাক্ত হয় ৭৭২ জন। বুধবার পর্যন্ত চট্টগ্রামে মোট আক্রান্ত হন ৯২ হাজার ৬৭৯ জন। এর মধ্যে মহানগরে ৬৮ হাজার ৩৩৮ জন এবং উপজেলায় ২৪ হাজার ৩৪১ জন। ইতোমধ্যে মারা গেছেন এক হাজার ৯৪ জন। এর মধ্যে মহানগরে ৬৩৯ জন ও উপজেলায় ৪৫৫ জন। চট্টগ্রামে সরকারি-বেসরকারি ১১টি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা চলছে।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন