চট্টগ্রাম ডায়াবেটিস জেনারেল হাসপাতালের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি অধ্যাপক জাহাঙ্গীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে সরকারি অনুদানের অর্থ আত্মসাৎসহ বিভিন্ন অনিয়ম খতিয়ে দেখতে হাসপাতাল পরিদর্শনে এসেছেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের দুই সদস্যের প্রতিনিধি দল।
সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় প্রতিনিধি দল ডায়াবেটিস হাসপাতালে আসেন। প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টা ধরে চলে তাদের তদন্ত কার্যক্রম। এ সময় হাসপাতালের বিভিন্ন নথি পর্যালোচনা করেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।
পরে প্রতিনিধি দলের প্রধান স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের জনস্বাস্থ্য শাখার উপ সচিব মু. জসীম উদ্দিন খান গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা মূলত হাসপাতালের ৫ অর্থ বছরের আর্থিক দিকগুলো নিয়ে তদন্ত করছি। যেসব তথ্য চাওয়া হয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের তা সরবরাহ করেছে। তথ্যগুলো পর্যালোচনা করার পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে প্রতিবেদন জমা দেব।
এ সময় হাসপাতালের সভাপতি জাহাঙ্গীর চৌধুরী নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আমি প্রতিনিধি দলের কাছে হাসপাতালের সব তথ্য হস্তান্তর করেছি। আর কোনো তথ্য প্রয়োজন হলে তাও দেব।
তিনি বলেন, হাসপাতালের পরিচালনা পর্ষদ নিয়ে সমাজসেবা অধিদফতর অনিয়ম হয়েছে বলে উল্লেখ করেছিল। কিন্তু পরিচালনা পর্ষদ কমিটির মেয়াদ বাড়ানোর জন্য তদন্তের আগেই আবেদন করে। তারা তা আমলে না নিয়ে প্রতিবেদন জমা দেয়। এতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও আমার কোনো অনিয়ম ছিল না। তাই আমি আদালতে শরণাপন্ন হয়েছিলাম। উচ্চ আদালত সব কিছু বিবেচনায় নিয়ে সমাজসেবা অধিদফতরের সুপারিশের বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ দেন।
জানা যায়, ২০০১ সালে ডায়াবেটিস সমিতির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেন জাহাঙ্গীর চৌধুরী। সেই থেকে হাসপাতালে তার একচ্ছত্র আধিপত্য শুরু হয়। তার বিরুদ্ধে কেউ বললেই চাকরিচ্যুতসহ নানাভাবে হেনস্তা হতে হতো। এ সময় তার অনিয়ম ঢাকতে হাসপাতালের বিভিন্ন পদে নিজের আত্মীয়স্বজনকে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ২০২১ সালের ২৮ জুন জনতা ব্যাংক লিমিটেড খাতুনগঞ্জ শাখার দায়েরকৃত অর্থঋণ মামলায় চকবাজার থানা তাকে গ্রেফতার করে। এরপর ওই বছরের ২১ জুলাই জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করে সমাজসেবা অধিদপ্তর।
প্রতিষ্ঠানটির দেওয়া প্রতিবেদনে জাহাঙ্গীরকে অভিযুক্ত করে সুপারিশ করা হয় এবং তাকে সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি দেয়। পরে জাহাঙ্গীর চৌধুরী উচ্চ আদালতে রিট করলে আদালত এ সিদ্ধান্তের ওপর স্থগিতাদেশ দেন।
বিডি প্রতিদিন/এমআই