চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নগরের সাগরিকা ও নূর নগর গরুর বাজারে ডিজিটাল পদ্ধতিতে বিকিকিনি শুরুর মাধ্যমে স্মার্ট হাটের যাত্রা শুরু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এ দুটি হাটে ডিজিটাল লেনদেন বুথ চালু করছে চসিক। এ দুটি বুথে এটিএম মেশিন, মোবাইলে আর্থিক লেনদেন সেবা, ডিজিটাল ব্যাংকিং ইত্যাদির সুবিধা উপভোগ করা যাবে।
মঙ্গলবার নগরীর সেনাকল্যাণ কনভেনশন সেন্টারে ‘ডিজিটাল হাট’ এর সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ডিজিটাল হাটের যাত্রা শুরু হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক এবিএম জহুরুল হুদা।
মাস্টারকার্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামালের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক ড. আশরাফুল আলম খান, বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম ডিপার্টমেন্টের পরিচালক মোতাসেম বিল্লাহ, অতিরিক্ত পরিচালক শাহ জিয়াউল হক, জুলিয়া চৌধুরী, যুগ্ম পরিচালক রেজাউল করিম, সরকার মো. আমির খসরু, সালাহউদ্দিন মাহমুদ, উপ-পরিচালক হাসনাত আহসান, চসিকের এস্টেট অফিসার রেজাউল করিম, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের ইভিপি আবদুল নাসের, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. আমানুল্লাহসহ বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ।
চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ডিজিটাল হাটের কারণে কোরবানির বিকিকিনিকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন অপরাধচক্রের কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবে। ক্রয়-বিক্রয় হবে নিরাপদ, ঝামেলাহীন। কোরবানির বাজারে দূরদূরান্ত থেকে পশু ক্রয়-বিক্রয়ে মানুষ আসেন। এ বাজারকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন অপরাধচক্র জালনোট সরবরাহ, পশুর ট্রাকে ডাকাতি, ক্রেতাদের টাকা ছিনতাইসহ নানা অপরাধ করে থাকে। এখন ডিজিটাল হাটে সব ধরনের আর্থিক লেনদেন হবে ডিজিটালি। তাই অপরাধচক্রের কার্যক্রম কমে আসবে।
তিনি বলেন, এবার দুটি হাটের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আগামীতে সবগুলো হাটে ক্যাশলেস লেনদেনের সুবিধা সৃষ্টি করব। প্রধানমন্ত্রী যে ক্যাশলেস বাংলাদেশ গড়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন, তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চট্টগ্রামে স্মার্ট নগরীতে পরিণত করার কাজ চলছে। ধরনের ডিজিটিাল সেবার উদ্যোগ চট্টগ্রামের বিপুল অর্থনৈতিক সম্ভাবনার সুফল ঘরে তুলতে সহায়তা করবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক এবিএম জহুরুল হুদা বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশকে স্মার্ট রাষ্ট্রে পরিণত করতে আমাদের পেমেন্ট সিস্টেমকে স্মার্ট করতে হবে। দেশের আর্থিক কার্যক্রমকে ডিজিটাল করার মাধ্যমে আমরা ‘ক্যাশলেস বাংলাদেশ’ গড়তে লড়ছি। বাংলাদেশ ব্যাংক দেশব্যাপী বিস্তৃত স্থায়ী ও সাপ্তাহিক পশুর হাটের লেনদেন ক্যাশলেস করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে।
দেশের মোট ১০টি ব্যাংকে লেনদেন হবে। এগুলো হলো- এবি ব্যাংক লিমিটেড, ব্যাংক এশিয়া লিমিটেড, ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড, আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসি, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড, পূবালী ব্যাংক লিমিটেড, দ্য সিটি ব্যাংক লিমিটেড এবং ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসি ও তিনটি আন্তর্জাতিক পেমেন্ট স্কিম- এমেক্স, মাস্টারকার্ড ও ভিসা এবং ৪টি এমএফএস প্রোভাইডার বিকাশ, নগদ, উপায় ও এমক্যাশ সচেতনমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। প্রতিষ্ঠান সমূহ ঢাকা উত্তরের আটটি এবং চট্টগ্রামের দুইটি হাটে ডিজিটাল বুথ স্থাপন করে অর্থ তাৎক্ষণিকভাবে ক্রেতার হিসাব হতে বিক্রেতার হিসেবে পৌঁছে দিয়ে নগদ অর্থ ব্যবহার হ্রাসকল্পে কাজ করবে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল