শুক্রবার বিকেল চারটা। সিআরবি শীরিষতলার বইমেলা পা রাখার জায়গা নেই। মেলার প্রবেশমুখে ভিড় জমেই আছে। বইমেলা ঘিরে পুরো এলাকা লোকে লোকারণ্যে পরিণত হয়েছে। টানা তিনদিনের ছুটিতে বইমেলায় বেড়েছে পাঠক-দর্শনার্থীদের ভিড়। গত সপ্তাহের ব্যবধানে এ সপ্তাহে বেশ জমে উঠেছে মেলা। বেড়েছে বিক্রিও। তবে পাঠকের চাহিদার শীর্ষে রয়েছে শিশুতোষ বই, গল্প ও মুক্তিযুদ্ধের বই। মেলা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ সপ্তাহে দর্শনার্থী বেড়েছে কয়েকগুণ। সব ধরনের শঙ্কা কাটিয়ে অমর একুশে বইমেলা হয়ে উঠেছে পাঠক-লেখকদের মিলনমেলায়।
কালধারা প্রকাশনীর প্রকাশক মহিউদ্দীন শাহ আলম নিপু বলেন, সিআরবি শিরীষতলায় বইমেলা ঘিরে পুরো এলাকায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। লেখক ও পাঠকের ভিড় লেগেই আছে বইমেলায়। আমাদের প্রকাশনী থেকে মুক্তিযুদ্ধের ওপর ছয়টি বই প্রকাশিত হয়েছে, তা ভালো পাঠক চাহিদা রয়েছে। এছাড়াও মেলায় শিশুতোষ বই, গল্প ও উপন্যাসধর্মী বইয়ের চাহিদা রয়েছে।
তিনি বলেন, পাঠক কারা তা নির্ধারণ করা কঠিন। তবে একটি পরিবারের সাথে যখন কয়েকজন শিশু আছে, তখন তাদের পছন্দের বই নিতে হয়। পরিবারের লোকজনও পছন্দের বই কিনে দিচ্ছে। এছাড়াও তরুণ প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের বই নিয়ে আগ্রহ আছে। তারা ইতিহাস ভিত্তিক এ বইয়ের পাশাপাশি অনান্য বই দেখছে। তবে কবিতার বই একেবারে তেমন চাহিদা কম। কারণ কবিরাও কবিতার বই নিচ্ছে বলে মনে হয় না।
বইমেলায় আসা জান্নাতুল মাওয়া বলেন, পরিবারে সাথে বইমেলায় প্রতি বছর আমরা আসি। এ সপ্তাহে বেশি আসা হয়েছে। একুশে ফেব্রুয়ারির দিন বন্ধুদের সাথে ঘুরতে আসলেও এবার পরিবারের সাথে এসেছি। প্রিয় লেখকদের বই ও থ্রিলার ধর্মী বই নেওয়ার চিন্তা ভাবনা আছে। এবারের বইমেলায় লোক সমাগম বেশি, তার উপর সিআরবিতে হওয়ার কারণে আরও বেড়েছে। গলুই প্রকাশনীর কাজী সাইফুল হক বলেন, অন্য সময়ের চেয়ে এ সপ্তাহে ভালো বিক্রি হচ্ছে। শিশুতোষ বইয়ের পাশাপশি মনীষিদের জীবনীগ্রন্থও ভালো চলছে। পাঠকদের যত সমাগম বাড়বে, বই বিক্রিও তত বাড়বে।
এবারের অমর একুশে বইমেলায় কবি ওমর কায়সারের কবিতার বই 'লাচুংয়ের রাত' প্রকাশ করেছে চন্দ্রবিন্দু প্রকাশনী। এছাড়াও লেখকের ছোটদের গল্প ‘ভাড়া করা সাইকেল’, ছড়ার বই ‘ছন্দ বোঝাই ট্রাক’, গল্পের বই ‘নোরা যখন ছোট ছিল’ বইগুলো বেশ পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে। কবি কামরুল হাসান বাদলের গল্পগ্রন্থ ‘খুন ও হুইসেল’ ও জয়নুল টিটো’র উপন্যাস ‘পয়েন্ট ওয়াই’।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আয়োজনে চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদ, চট্টগ্রাম নাগরিক সমাজ, বীর মুক্তিযোদ্ধা, লেখক, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ ও সাহিত্য-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সহযোগিতায় এ বইমেলা হচ্ছে। গত ৯ ফেব্রুয়ারি বইমেলার উদ্বোধন করেন চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। ৪৩ হাজার বর্গফুটে ঢাকা ও চট্টগ্রামের ৯২টি প্রকাশনা সংস্থার ১৫৫টি স্টল। এর মধ্যে ডাবল স্টল ৭৮টি, সিঙ্গেল ৭৭টি।
বিডি প্রতিদিন/এএ