খুলনার তেরখাদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক আব্দুল্লা হেল মামুনকে মারধর করার অভিযোগে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা এফএম ওহিদুজ্জামানকে গ্রেফতারের দাবিতে আজ শনিবার সকাল থেকে খুলনার সকল সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ৪৮ ঘণ্টার চিকিৎসক ধর্মঘট শুরু হয়েছে। এর আগে একই দাবিতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত চিকিৎসক ধর্মঘট পালিত হয়। মাঝে একদিন বিরতির পর শনিবার সকাল ৬ টা থেকে আবারো শুরু হয়েছে চিকিৎসক ধর্মঘট। টানা কর্মসূচি চলবে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) খুলনা শাখা, প্রাইভেট মেডিকেল প্র্যাক্টিশনার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমপিএ) ও প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিপিসিডিওএ) একযোগে এই কর্মসূচি পালন করেছে।
এদিকে খুলনা মহানগর ও জেলায় চিকিত্সক ধর্মঘটে অচল হয়ে পড়েছে চিকিৎসা সেবা। সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীরা। সরেজমিনে সকাল থেকে অসংখ্য রোগীকে হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা সেবা না পেয়ে ফিরতে দেখা গেছে।
সাতক্ষীরা থেকে চিকিৎসা নিতে আসা কিডনি রোগী গৃহবধূ ফিরোজা ইয়াসমীন চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র নিতে হন্যে হয়ে ঘুরছেন। নির্দেশনা অনুযায়ী তিনদিন ওষুধ খাবার পর বৃহস্পতিবার আইভিইউ পরীক্ষা করেছেন। কিন্তু চিকিৎসক ধর্মঘটের কারণে পরীক্ষার রিপোর্ট এখনো হাতে পাননি। ফলে ব্যবস্থাপত্র নিতে না পেরে কিডনির ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছেন তিনি।
বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ) খুলনা জেলা সভাপতি ডা. বাহারুল আলম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, তেরখাদা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত অবস্থায় চিকিৎসককে মারধরে জড়িতদের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরছে কিন্তু পুলিশ ধরছে না। বরং আসামিরা এখন ফোনে হুমকি দিচ্ছেন। বাধ্য হয়েই চিকিৎসকরা ধর্মঘট পালন করছে। পুলিশ যখনই আসামিদের গ্রেফতার করবে তখনই ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হবে বলেন জানান ডা. বাহারুল আলম।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রবিবার রাতে তেরখাদা সদর ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান এফ এম ওহিদুজ্জামানসহ তার সহযোগিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঢুকে কর্মরত ডা. আব্দুল্লা হেল মামুনকে পিটিয়ে আহত করেন। এ ঘটনায় চেয়ারম্যানকে আসামি করে মামলা করলেও পুলিশ তাকে গ্রেফতার করছে না।
বিডি-প্রতিদিন/৫ মার্চ ২০১৬/শরীফ