গাইনোকোলজিস্ট ডা. নওশিন শারমিন পূরবী বলেছেন, অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী না হওয়ায় অনেক নারী তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এমনকি যেসব নারী কর্মজীবী তারা সময়ের অভাবে ফ্রি চিকিৎসাও নিতে আসতে পারছেন না। ফলে সমাজের বৃহৎ সংখ্যক নারী দিনের পর দিন নানা রোগ-ব্যধিতে ভুগে থাকেন। যার প্রভাব পড়ে তার সন্তানের ওপর। এজন্য প্রত্যেক কর্মস্থলে চিকিৎসাকেন্দ্র বসানো দরকার।
শনিবার (৫ মার্চ) ইডব্লিউএমজিএল'র কনফারেন্স রুমে বাংলাদেশ প্রতিদিন আয়োজিত 'অধিকার, মর্যাদায় নারী-পুরুষ সমানে সমান' শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
ডা. পূরবী বলেন, নারী উন্নয়নে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়েছে। দেশের প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেত্রী- সবাই নারী। তবুও এখন পর্যন্ত অনেক নারী নানাভাবে বৈষম্য ও নির্যাতনের শিকার। এখনো দেশে মাতৃত্বজনিত মৃত্যুর হার ১৪ শতাংশ। ৯ শতাংশ নারী আত্মহত্যা করছে। কেন নারীরা আত্মহত্যা করছে?
তিনি বলেন, কিশোরীদের বয়ঃসন্ধিকালে স্বাস্থ্যতথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে ২০১৬ সালে এসেও অভিভাবকদের মধ্যে অনীহা দেখা যায়। এ কারণে মেয়েদের মধ্যে নানা কুসংস্কার বাসা বাঁধে। কিশোরীরা বাবা-মাকে তাদের সমস্যার কথা বলতে পারে না। এটা গুরুত্বপূর্ণ একটা সামাজিক সমস্যা। নারীর সুস্বাস্থ্যের জন্য এর সমাধান প্রয়োজন। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে তাদের স্বাস্থ্যতথ্য দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। অনেক নারী দীর্ঘদিন শারীরিক সমস্যায় ভুগলেও কাউকে বলে না। যখন তারা ডাক্তারের কাছে আসে তখন রোগ অনেক জটিল আকার ধারণ করে।
ডা. পূরবী বলেন, নারীর এগিয়ে যাওয়ার জন্য পুরুষের বিশেষ করে স্বামীর ভূমিকা অনেক বেশি। এখনও পারিবারিক ও সামাজিক সমস্যার কারণে নারীরা চ্যালেঞ্জিং পেশায় যেতে পারছে না। অনেক পুরুষ ইতিবাচক পদক্ষেপ নিলে অন্যরা তাকে কটাক্ষ করে বলেন, 'তুমি তো বউয়ের ভেড়া হয়ে গেছ।' এই মানসিকতা বদলাতে হবে।
এছাড়া সন্তান প্রতিপালন কর্মজীবী নারীদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এজন্য পর্যাপ্ত ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন করা দরকার। নারীরা দুঃশ্চিন্তামুক্ত হয়ে নিজেকে কাজে নিয়োজিত করতে পারবে।
বসুন্ধরা গ্রুপের টেলিভিশন চ্যানেল নিউজ টুয়েন্টিফোর'র প্রধান বার্তা সম্পাদক শাহনাজ মুন্নীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকী, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম ওয়াহিদুজ্জামান, কালের কণ্ঠের সম্পাদক কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিয়া রহমান, সংসদ সদস্য ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পী, নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল অব. মোহাম্মদ আলী শিকদার, অভিনেত্রী নার্গিস আক্তার, জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের ক্রিকেটার সাথিরা জেসি প্রমুখ । অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম।
বিডি-প্রতিদিন/৫ মার্চ ২০১৬/ এস আহমেদ