মাত্র ৪০ হাজার টাকা যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে এক ব্যাবসায়ীর বিরুদ্ধে। বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে নাটোর শহরের বনবেলঘরিয়া এলাকায়। হাসপাতালে লাশ ফেলে রেখে পালিয়েছেন ওই গৃহবধূর স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ি।
নাটোর সদর থানা সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালের জরুরী বিভাগ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ বুধবার রাতে আধুনিক সদর হাসপাতাল থেকে মরিয়ম বেগম (৩৫) নামের এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে। বৃহস্পতিবার সকালে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে লাশটি তাঁর পিতার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মরিয়ম বেগম নাটোর শহেরর বনবেলঘরিয়া এলাকার রফিকুল ইসলামের স্ত্রী। তাঁর পিতা মহম্মদ আলী শহরের লালবাজার এলাকার বাসিন্দা।
মহম্মদ আলীর ভাই হাবিবুর রহমান বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জানান, প্রায় ১০ মাস আগে মরিয়ম বেগমের বিয়ে হয় বনবেলঘরিয়া এলাকার আব্দুর রবের ছেলে রফিকুল ইসলামের সাথে। তিনি পেশায় একজন বিস্কুট ব্যবসায়ী। বিয়ের সময় যৌতুক হিসাবে তাঁকে ৪০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছিল। পরে ব্যবসার জন্য আরও ৪০ হাজার টাকা দাবি করে। এ টাকার জন্য তাকে প্রায় মারধর করা হতো। টাকা চাওয়া নিয়ে বিরোধের জের ধরে বুধবার বিকেলে মরিয়মকে মারধর করে স্থানীয় কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাতে সেখান থেকে তাকে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মরিয়মকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর মরিয়মের লাশ ফেলে রেখে তার স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ি পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ও মরিয়মের আত্মীয়স্বজন হাসপাতালে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
চাচা হাবিবুর রহমান জানান, লাশের গোসল করানোর সময় তার সারা শরীরে মারধরের আঘাত দেখা গেছে।
সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক আবুল কালাম আজাদ জানান, লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। তদন্তের ফলাফল হাতে না পাওয়া পর্যন্ত মৃত্যুর কারণ জানানো সম্ভব হবে না। এ ব্যাপারে নাটোর সদর থানায় নিহতের বাবা মহম্মদ আলী লিখিত অভিযোগ করেছেন।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, অভিযোগটি প্রাথমিকভাবে অপমৃত্যু মামলা হিসাবে নথীভুক্ত করে লাশ ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। ময়নাতদন্তে মৃত্যুর কারণ জানা যাওয়ার পর নিয়মিত মামলা হবে। অভিযুক্ত স্বামী ও তাঁর বাড়ির লোকজন সবাই পলাতক থাকায় তাঁদের বক্তব্য জানা যায়নি।
বিডি-প্রতিদিন/২৫ মার্চ, ২০১৬/মাহবুব