নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল্যকর সাত খুনের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সাত জনের সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার সকাল ১০টা হতে দুপুর ১ টা পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালতে গ্রেফতারকৃত ২৩ আসামির উপস্থিতিতে সাক্ষ্য ও জেরা গ্রহণ করা হয়। পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ২৫ এপ্রিল দিন ধার্য্য করেছেন আদালত।
সোমবার যাদের সাক্ষ্য গ্রহণ হয়েছে তারা হলেন নিহত নজরুল ইসলামের শ্যালক সাইদুল ইসলাম, নিহত আইনজীবী চন্দন সরকারের ভাগিনা প্রীতম কুমার, নিহত তাজুল ইসলামের চাচা আবু তাহের, এসআই আবু হানিফ, কনস্টেবল আব্দুল কুদ্দুস, নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি ও এসআই মিজানুর রহমান।
বাদী পক্ষের আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন খান জানান, নিহত নজরুল ইসলামের ভাই আবদুস সালাম সাক্ষী দিতে আদালতে আসতে পারেননি। তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হয়েছে। আদালতে সাক্ষীদের আসার জন্য নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে। এদিন আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণের সময়ে নূর হোসেন ঠোঁটে আঙ্গুল দিয়ে চুপ থাকতে সাক্ষীদের প্রতি অঙ্গভঙ্গি করেন।
সাত খুনের ঘটনায় দুটি মামলা হয়। একটি মামলার বাদী বিজয় কুমার পাল হলেন নিহত অ্যাডভোকেট চন্দন সরকারের মেয়ে জামাতা ও অপর বাদী সেলিনা ইসলাম বিউটি হলেন নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী। দুটি মামলাতেই অভিন্ন সাক্ষী ১২৭জন করে। এ কারণে উভয় মামলার সাক্ষীদের একই সঙ্গে দুই মামলায় জেরা করা হয়।
প্রসঙ্গত ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন ও গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম এবং আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তাঁর গাড়িচালক ইব্রাহীম অপহৃত হন। পরে ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ছয়জনের ও ১ মে একজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
তদন্ত শেষে প্রায় এক বছর পর গত ৮ এপ্রিল নূর হোসেন, র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। কিন্তু অভিযোগপত্র থেকে পাঁচ আসামিকে বাদ দেওয়ায় এবং প্রধান আসামি নূর হোসেনের জবানবন্দি ছাড়া অভিযোগপত্র আদালত আমলে নেওয়ায় ‘নারাজি’ আবেদন করেন সেলিনা ইসলাম বিউটি। আবেদনটি ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ও জজ আদালতে খারিজ হয়ে গেলে বিউটি উচ্চ আদালতে যান। হাইকোর্টের আদেশে বলা হয়, পুলিশ চাইলে মামলাটির ‘অধিকতর তদন্ত’ করতে পারে এবং ‘হত্যার ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনার’ ধারা যুক্ত করে নতুন করে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে পারে।
বিডি-প্রতিদিন/১৮ এপ্রিল ২০১৬/ এস আহমেদ