সরকার জেলা পরিষদের নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় চট্টগ্রামে নড়েচড়ে উঠেছেন পদ-প্রত্যাশী আওয়ামী লীগ নেতারা। এতে অনেক নেতা দলের কেন্দ্রীয় ও জেলার শীর্ষ নেতাদের ঘরে-অফিসে, সভা-সমাবেশে কৌশলে আগের চেয়ে অনেক বেশি যোগাযোগ শুরু করেছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। তবে দলীয়, নাকি নির্দলীয় এবং নির্বাচনে স্থানীয় সংসদ সদস্যরা ভোট দিতে পারবেন কি না সে ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
আগামী ৬ মাস বা ডিসেম্বরের মধ্যে এ নির্বাচন হওয়ায় সম্ভাবনা রয়েছে বলে সূত্রে জানা গেছে। এজন্য জেলা পরিষদ আইনের সংশোধনসহ নানা কর্মপ্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। এটিই হবে দেশে প্রথমবারের মতো জেলা পরিষদ নির্বাচন। এর আগে পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি জেলা বাদে বাকি ৬১ জেলা পরিষদে ২০১১ সালের ১৫ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাদের প্রশাসক নিয়োগ করে সরকার।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য আমিনুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় জেলা পরিষদ নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। দল থেকে প্রতিটি জেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী দেওয়া হবে। তবে এ নিয়ে পরে পার্টির কার্যকরী ফোরামে আরও আলোচনা করে পুরো নির্বাচনী পদ্ধতি নির্ধারণ করা হবে।
জানা যায়, গত ২৪ জুলাই আওয়ামী লীগ ওয়ার্কিং কমিটির সভায় আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরের মধ্যে এ নির্বাচন করতে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা। সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে ইউনিয়ন, উপজেলা, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নির্বাচক মন্ডলীতে রেখে পূর্ণাঙ্গ জেলা পরিষদ গঠন করার। নির্বাচিত সংসদ সদস্যদেরও ভোটার করার চিন্তাভাবনা রয়েছে সরকারের। স্থানীয় সরকার বিভাগ এ লক্ষ্যে জেলা পরিষদ আইন-২০০০ পর্যালোচনার কাজ শুরু করেছে।
বর্তমান জেলা পরিষদের প্রশাসক ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ সালাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা পরিষদ নির্বাচন দেয়ার। এতে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালনকালে চেষ্টা করেছি এবং এখনও করছি প্রতিটি এলাকার উন্নয়নসহ নানাবিধ কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে। তিনি বলেন, যেহেতু নির্বাচন আসছে, যে কোন ব্যক্তি বা দলীয় নেতা দল থেকে মনোনয়ন পেতে আগ্রহী হবে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় চট্টগ্রামে সম্ভাব্য অনেক প্রার্থীর নামও অনেকের মুখে শুনা যাচ্ছে। এতে যোগ্য বিবেচনা করে দলীয় মনোনয়ন পেতে চালাচ্ছেন কৌশলী তদবির। ধর্না দিচ্ছেন কেন্দ্রীয় ও জেলার শীর্ষ নেতাদের কাছেও। এ পদে আসতে যেসব নেতার নাম আলোচনায় আছে, তাদের মধ্যে বর্তমান জেলা পরিষদের প্রশাসক ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ সালাম, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ইউনুচ গণি, উত্তর জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম রাশেদুল আলমসহ অনেকের নাম। তবে মামলা, ব্যবসায়ীকভাবে বিভিন্ন রাজনৈতিক সুবিধাভোগী, ইউপি নির্বাচনে প্রার্থীদের কাজ থেকে সুবিধা নেওয়া, আন্দোলন সংগ্রামে মাঠে না থাকা এমন নেতারাও এসব তদবিরে থেমে নেই বলে জানান নেতা-কর্মীরা।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ