পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহীদুল হক বলেছেন, পৃথিবীর সব দেশে জঙ্গিদের সরাসরি ‘ক্রসফায়ার’ করা হয়। তবে বাংলাদেশে জঙ্গিদের আত্মসমর্পণের সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু জঙ্গিরা গ্রেফতার হতে চায় না। তারা আত্মঘাতী। তাদের মিশন- হয় মারবো, না হয় মরবো। আর এ জন্যই তারা পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে জড়াচ্ছে, মারা পড়ছে। কিন্তু একটি মহল পুলিশকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে।
শনিবার দুপুরে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইন মাঠে কমিউনিটি পুলিশিং ও জঙ্গি বিরোধী সমাবেশে প্রধান বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আইজিপি বলেন, দেশের তরুণ সমাজকে ইসলামের অপব্যাখা দিয়ে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। তাদেরকে জান্নাতের লোভ দেখানো হচ্ছে। জঙ্গিবাদ ইসলাম নয়। জঙ্গিবাদে জড়ানোর পরেও যদি কোনো যুবক অপরাধ না করে থাকে, তবে সে সহজেই সে পথ থেকে ফিরে আসতে পারবে। পুলিশ তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে। তাকে কোনো হয়রানি করা হবে না। তবে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সংগঠিত করে থাকলে দেশের প্রচলিত আইনে তার বিচার হবে।
তিনি বলেন, ২০১৩ সালের পর থেকে সারাদেশে ৫৭টি জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৪৯টি ঘটনারই কারণ উৎঘাটন করা গেছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ১৫৭ জনকে। বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছে অনেকেই। তাই পুলিশের সাফল্য যথেষ্ট। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে দেশে আজ গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ সব মানুষকে সঙ্গে নিয়েই কাজ করে।
পুলিশের এই শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সঙ্গে ২৭টি ক্ষেত্রে পুলিশ সরাসরি কাজ করতে পারে। এখন এই কমিটির প্রধান কাজ হবে জঙ্গিবাদ নির্মূলে ভূমিকা রাখা। কারণ জঙ্গিবাদ এখন দেশের প্রধান সমস্যা। দ্বিতীয় মাদক। এসব কিছুই আমরা নির্মূল করবো। দেশকে সোনার বাংলাদেশ হিসেবেই গড়বো।
গুলশান, শোলাকিয়া, কল্যাণপুরে যেসব জঙ্গি মারা গেছে, তাদের স্বজনরা লাশ নিতে আসছে না। কারণ তারা এই কর্মকাণ্ড ঘৃণা করে। যারা মনে করছেন, এদেশ জঙ্গিদের উর্বর ভূমি, তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন। এদেশে জঙ্গিদের কোনো স্থান হবে না।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মেট্রেপলিটন পুলিশের কমিশনার শফিকুল ইসলাম। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন রাজশাহী-২ আসনের এমপি ফজলে হোসেন বাদশা, মহানগর কমিউনিটি পুলিশিংয়ের আহ্বায়ক ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. আবদুল খালেক, নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, বিভাগীয় কমিশনার আবদুল হান্নান, পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি খুরশীদ হোসেন, রাসিকের দয়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র নিযাম-উল-আযীম, র্যাব-৫ এর অধিনায়ক মাহবুবুল আলম, বিজিবির ১ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট শাহজাহান সিরাজ প্রমুখ।
বিডি-প্রতিদিন/ ০৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৬/ আফরোজ