সিলেটের এমসি কলেজে পরীক্ষা দিতে এসে সরকারি মহিলা কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী খাদিজা আক্তার নার্গিসকে কুপিয়ে জখম করা সেই হামলাকারী বদরুল ছাত্রলীগের সদস্য নয় বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসাইন। আজ দুপুরে স্কয়ার হাসপাতালে নার্গিসের অবস্থা পরিদর্শনকালে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
অন্যদিকে ছাত্রলীগের সভাপতি মো. সাইফুর রহমান সোহাগ বলেন, হামলাকারী বদরুল আলম ছাত্রলীগের কর্মী নয়, সে স্কুল শিক্ষক। তার সঙ্গে ছাত্রলীগের কোনো সম্পর্ক নেই।
ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বদরুল আলমের সঙ্গে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বর্তমানে কোনো ধরনের সম্পর্ক নেই। তিনি শিক্ষক হিসেবে সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার আলহাজ আয়াজুর রহমান উচ্চবিদ্যালয়ে কর্মরত রয়েছেন। সংগঠনের ৫’র (গ) ধারা অনুযায়ী কেউ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলে বা কেউ কর্মক্ষেত্রে যোগদানের সঙ্গে সঙ্গেই তার সদস্যপদ বাতিল বলে গণ্য হয়। কাজেই তার সঙ্গে ছাত্রলীগের নূন্যতম সর্ম্পক নেই।
অন্যদিকে ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সিলেট এম সি কলেজে সংঘটিত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড একান্তই বদরুল আলমের ব্যক্তিগত নৃশংসতা। তার ব্যক্তিগত অপকর্মের দায়ভার কোনোভাবেই বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নিতে পারে না। যেহেতু সে বর্তমানে ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পর্কহীন এবং অন্য একটি পেশায় কমর্রত, তাই গণমাধ্যমের সাংবাদিক বন্ধুদের প্রতি আহ্বান, তারা যেন সন্ত্রাসী বদরুল আলমের ব্যক্তিগত অপকর্মের সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে না জড়ান বা ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার না করেন। বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রীর ওপর হামলার ঘটনায় ছাত্রলীগ ব্যথিত উল্লেখ করে এ ঘটনার নিন্দা জানানো হয়। বদরুল আলমকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
এদিকে এ ঘটনায় মঙ্গলবার নার্গিসের চাচা আব্দুল কুদ্দুস বাদি হয়ে শাহপরাণ থানায় বদরুলের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন। শাহপরাণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহজালাল মুন্সি মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মামলার একমাত্র আসামি বদরুল পুলিশ হেফাজতে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এর আগে, সোমবার সন্ধ্যায় এমসি কলেজ থেকে পরীক্ষা দিয়ে বের হওয়ার পর নার্গিসকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছিল বদরুল। পরে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন তাকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোর্পদ করে। গুরুতর আহতাবস্থায় পরে তাকে পুলিশ প্রহরায় ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খাদিজা সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বদরুল এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানা গেছে।
বিডি প্রতিদিন/০৪ অক্টোবর ২০১৬/হিমেল