সিলেটে ছাত্রলীগ নেতার নৃশংসতার শিকার কলেজছাত্রী খাদিজা বেগম নার্গিসের অবস্থা সংকটাপন্ন। মঙ্গলবার বিকালে অস্ত্রোপচার শেষে তাকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ৭২ ঘণ্টার নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। নার্গিসের মাথায় অসংখ্য চাপাতির কোপের আঘাত রয়েছে। আঘাত রয়েছে দুই হাতেও। চিকিৎসকরা বলছেন, নার্গিসের শারীরিক অবস্থা নিয়ে এখন বলার মতো কিছু নেই। ৭২ ঘণ্টা পার হলে তবেই বলা যাবে।
এর আগে, সোমবার বিকাল ৫টার দিকে এমসি কলেজ কেন্দ্রে স্নাতক পরীক্ষা শেষে বের হওয়ার পর নার্গিসকে বদরুল নামের ওই ছাত্রলীগ নেতা এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। এরপর নার্গিসকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হলে মধ্যরাতে তাকে ঢাকায় এনে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আর ঘটনার পর স্থানীয়রা বদরুলকে পিটিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে।
স্কয়ার হাসপাতালের মেডিসিন অ্যান্ড ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিভাগের কনসালট্যান্ট ও অ্যাসোসিয়েট মেডিকেল ডিরেক্টর ড. মির্জা নাজিম উদ্দিন গতকাল জানান, ‘নার্গিসের মাথায় অসংখ্য চাপাতির কোপের চিহ্ন রয়েছে। তাকে এমনভাবে কোপানো হয়েছে যে, খুলি ভেদ করে ব্রেন ইনজুরি হয়েছে। কোপানোর সময় হাত দিয়ে ঠেকানোর চেষ্টা করায় তার দুই হাতের রগ কেটে গেছে।’
নার্গিসের অস্ত্রোপচারে অংশ নেওয়া চিকিৎসক দলের প্রধান নিউরো সার্জন ডা. এ এম রেজাউস সাত্তার বলেন, ‘নার্গিসের মাথায় অসংখ্য আঘাত ছিল। তার যে অপারেশন হয়েছে, তাতে ৭২ ঘণ্টা আগে তার সম্পর্কে কিছু বলা যাবে না। তিনি ঝুঁকিতে আছেন। এ ধরনের রোগীদের বাঁচার সম্ভাবনা শতকরা ৫ ভাগ।’
পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, বদরুলের সঙ্গে নার্গিসের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কয়েকদিন ধরে তাদের মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে বদরুল এ কাণ্ড ঘটিয়েছে।
তবে অস্বীকার করেছেন নার্গিসের মামা আবদুল বাসেত। তিনি বলেন, খবরের কাগজে এই ছেলের সঙ্গে নার্গিসের প্রেমের খবর প্রকাশিত হয়েছে, যা একেবারেই ঠিক নয়। তিনি বলেন, নার্গিসের মা তার মেয়ের এ অবস্থার কথা এখনো জানেন না। তিনি জানেন মেয়ের মাথায় একটুখানি কোপ লেগেছে।
বিডি-প্রতিদিন/০৫ অক্টোবর, ২০১৬/মাহবুব