বন্দরে আসা চাল-ডাল-গমসহ বিভিন্ন ধরনের খাদ্যশস্য ও খোলা পন্য খালাসে নতুন পদ্ধতি অবলম্বন করতে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। এতে আগে যে পরিমাণ পণ্য খালাসে সাতদিন সময় লাগতো এখন লাগবে একদিনের মতো। স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি খোলা বা কার্গো পণ্য খালাসের জন্য বেলজিয়াম থেকে আনা হচ্ছে প্রায় সাত কোটি টাকা মূল্যের নিউমেটিক কনভেয়র মেশিন। আগামী দুইমাসের মধ্যে এই স্বয়ংক্রিয় মেশিন স্থাপন করার কথা জানিয়েছে বন্দরের দায়ত্বশীল কর্মকর্তারা।
এতোদিন খোলা পণ্য নিয়ে আসা জাহাজ থেকে পণ্য খালাস করতে শ্রমিকরা জাহাজে উঠে বস্তাবন্দী করে তারপর ওজন দিয়ে খোলা পণ্য খালাস করতো। একাজ করতে গিয়ে একদিকে শ্রমিকরা স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে পড়েন। অন্যদিকে সময় লাগতো বেশি। এসব পণ্য ওজন করে বস্তাবন্দি করতে গিয়ে বড় একটি অংশ নষ্টও হয়ে থাকে। অন্যদিকে আমদানিকারক ও জাহাজ মালিকের খরচ হয় অতিরিক্ত টাকা। যা ভোক্তার উপর গিয়ে পড়ে। এসব ঝামেলা এড়াতে বন্দরে স্থাপন করা হচ্ছে অত্যাধুনিক নিউমেটিক কনভেয়র বা ডেকোভেটর। এ ধরনের একটি যন্ত্রের সাহায্যে দৈনিক ১ হাজার ৬০০ টন পণ্য খালাস করা যাবে। চট্টগ্রাম বন্দরে আরও তিনটি যন্ত্র ক্রয় করা সম্ভব হলে দিনে ৫ হাজার টন খাদ্যশস্য বা সার খালাস করা যাবে। এই যন্ত্রের সাহায্যে দ্রুততম সময়ে পণ্য ওজন ও খালাস সম্ভব হবে। এতে পণ্য হ্যান্ডলিংয়ের পরিমাণ বাড়ার পাশাপাশি বাড়বে বন্দরের আয়ও।
বন্দরের প্রধান প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) নাজমুল হক জানান, সাধারণত খাদ্য পণ্যের একটি জাহাজ থেকে খোলা পণ্য খালাস করতে ১০ থেকে ১২ দিন লেগে যায়। কিন্তু কনভেয়রের সাহায্যে খালাস শুরু হলে মাত্র তিনদিনে জাহাজ বন্দর ত্যাগ করতে পারবে। এতে বন্দরে অনেক বেশি খাদ্য পণ্যবাহী জাহাজ ভিড়তে পারবে। ফলে একদিকে সময় বাঁচবে অন্যদিকে বন্দরের হ্যান্ডলিং বেড়ে যাবে। এছাড়া স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে পণ্য অপচয় হবে না। পরিবেশও থাকবে দূষণমুক্ত।
বন্দর কর্তৃপক্ষে সূত্রে জানা গেছে, চুক্তি অনুযায়ী যন্ত্রটি সরবরাহ করছে কিনা তা দেখতে শিগগির বেলজিয়াম যাচ্ছেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুল কুদ্দুস খান, চট্টগ্রাম বন্দরের সদস্য (হারবার ও মেরিন) কমডোর শাহীন রহমান, প্রধান প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) নাজমুল হক, নির্বাহী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) নজরুল ইসলাম, সিনিয়র ট্রেনিং অফিসার আবদুল হান্নান।
বিডি-প্রতিদিন/ ০৫ অক্টোবর, ২০১৬/ আফরোজ