সরকার আবাসিক এলাকায় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। অথচ চট্টগ্রাম মহানগরেই সরকারি তিন সংস্থার মালিকানাধীন ২৭ আবাসিক এলাকায় গড়ে উঠেছে ১৭৩০টি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। এখানে মানাই হচ্ছে না সরকারি নির্দেশনা।
সকরারি সংস্থার মধ্যে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) আছে ৬টি আবাসিক এলাকা, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (চউক) আছে ৭টি ও গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে আছে ১৪টি।
তালিকা মতে চসিক এসব প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী রবিবার মন্ত্রাণলয়ে এ সংক্রান্ত একটি জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে আবাসিক এলাকায় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বিষয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত আসবে বলে জানা যায়।
চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, এ সংক্রান্ত একাটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানকে তিন শ্রেণীতে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে আছে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের প্রতিষ্ঠান, ফার্মেসি ও স্বাস্থ্যসেবা সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান ও বিউটি পার্লার জাতীয় অপ্রয়োজনীয় প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে প্রয়োজনীয় পণ্য এবং স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সরিয়ে নিতে সময় দেওয়া হয়েছে। তবে অপ্রয়োজনীয়-অহেতুক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দ্রুত সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এ বিষয়ে আগামী রবিবার মন্ত্রণালয়ে একটি জরুরি বৈঠকও আছে। সেখান থেকে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত ও নির্দেশনা আসবে।
চসিকের রাজস্ব বিভাগ সূত্রে জানা যায়, আবাসিক এলাকায় ১৭৩০টি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮৩৯টি হোটেল, রেস্টুরেন্ট, গেস্ট হাউজের লাইসেন্স চলতি বছরে নবায়ন করা হয়নি। তবে মুদি দোকান, কসমেটিকস, ফার্মেসি, সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান, ঠিকাদারী ও পণ্যের পরিবেশক ইত্যাদির লাইসেন্স নবায়ন করা হয়েছে। তাছাড়া ১০৭৫টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে আবাসিক এলাকা ছেড়ে দিতে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। নোটিশের প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে ২১টি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে। ৬৫৫টি প্রতিষ্ঠানকে প্রতিষ্ঠান ছেড়ে দিতে নোটিশ দেওয়ার কাজ চলমান। চসিকের প্রদত্ত মোট লাইসেন্স সংখ্যা হলো ১ লাখ ৩ হাজার ৮১২ টি। এসব লাইসেন্স থেকে বাৎসারিক রাজস্ব দাবি হলো ৫১ কোটি ৩৮ লাখ ৮৯ হাজার ৬৯২ টাকা। গত ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত আদায় হয় ১১ কোটি ৮৪ লাখ ৭৭ হাজার ১৯৪ টাকা।
চসিক মালিকানাধীন আবাসিক এলাকার মধ্যে আছে, সুগন্ধা আবাসিক এলাকা, দক্ষিণ খুলশী ভিআইপি আবাসিক, জয়পাহাড় হাউজিং সোসাইটি, উত্তর খুলশী কোবে সিটি হাউজিং প্রকল্প, বাকলিয় ছৈয়দ শাহ রোড হাউজিং প্রকল্প ও বগারবিল শান্তি নগর আবাসিক এলাকা। চউকের আবাসিক এলাকার মধ্যে আছে- হিলভিউ আবাসিক, চাঁন্দগাও আবাসিক, চন্দ্রিমা আবাসিক, আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক, কর্নেল হাট সিডিএ আবাসিক, কল্পলোক আবাসিক ও মেহেদী বাগ আবাসিক এলাকা। গণপূর্তের আবাসিক এলাকাগুলো হলো- নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটি, খুলশী আবাসিক, কাতালগঞ্জ আবাসিক, পাঁচলাইশ আবাসিক, রহমতগঞ্জ আবাসিক, হালিশহর হাউজিং এস্টেট এ ব্লক, বি ব্লক, জি ব্লক, এইচ ব্লক, আই ব্লক (আংশিক), কে ব্লক, এল ব্লক, ফিরোজ শাহ আবাসিক ও কৈবল্যধাম হাউজিং এস্টেট।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৯ অক্টোবর, ২০১৬/ আফরোজ