বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ বলেছেন, দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা যাকে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে নির্বাচন করার জন্য নৌকা প্রতীক দিয়েছেন, আমাদের দায়িত্ব নৌকার বিজয় নিশ্চিত করা। আর যদি নেত্রীর নির্দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে চান? তাহলে ভবিষ্যতে অনেক কষ্ট পেতে হবে। আমি জানি কুমিল্লার দুই বড় রাজনৈতিক নেতার মধ্যে দীর্ঘদিন যাবত কিছু ভুল বুঝাবুঝি হয়ে আসছে। এসব ভুল বুঝাবুঝি ও বিভেদ ভুলে গিয়ে শেখ হাসিনার নির্দেশ অনুযায়ী ঐক্যবদ্ধ হোন।
সোমবার দুপুরে কুমিল্লা টাউনহল অডিটরিয়ামে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগ এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে যৌথ কর্মী সভায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথি বক্তব্যে জাফর উল্লাহ আরো বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতীর সাথে জড়িত থেকে দিনের বেলায় নৌকা, আর রাতের বেলায় নৌকার বিরুদ্ধে কথা সেটা আমরা বরদাস্ত করবো না।
তিনি বলেন, দেখেছি কত বড় বড় নেতা, নিজেকে অনেক বড় মনে করেন। কিন্তু নৌকা প্রতীক না থাকলে তার যে কি হবে? সেটার গ্যারান্টি নেই।
জাফর উল্লাহ আরো বলেন, যদি ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকতে চান? নৌকার ভাল চান? শেখ হাসিনার ভাল চান? তাহলে দয়া করে ভুল করবেন না। শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত অনুসারে শতভাগ দায়িত্ব পালনের জন্য নৌকার জন্য মাঠে নেমে পড়ুন।
তিনি বলেন আমরা ঐক্যবদ্ধ হলে কেউ হারাতে পারবে না। কারণ নারায়ণগঞ্জের সিটি নির্বাচন তার প্রমাণ। নারায়ণগঞ্জে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিশাল ব্যবধানে বিজয় নিশ্চিত করেছি। কুমিল্লায়ও যদি সেই পুরনো বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হই তাহলে নারায়ণগরঞ্জর মত কুমিল্লায়ও বিশাল বিজয় আসবে।
তিনি কুমিল্লার সদ্য সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কুকে নিয়ে বলেন, বিএনপির যে প্রার্থী, তিনি ৫ বছর মেয়র ছিলেন। তার দুর্নীতির কথা আমরা শুনেছি। তার শত শত দুর্নীতির মধ্যে ৯শ লোককে ভবন নির্মাণে সুযোগ দিয়েছেন বিশাল টাকার লোভে। মেয়র ৯শ লোককে খুশি করেছেন আর হাজার হাজার গরিব দুঃখীদের হক আপনি খেয়েছেন। সেই গরিব ও দুঃখিরা আপনাকে আগামী ৩০ মার্চ নির্বাচনে বুঝিয়ে দিবে।
কর্মী সভায় এসম বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমা, আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক বাবু অসীম কুমার উকিল, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক বাবু সজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুর সবুর, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন নাহার লাইলি, কেন্দ্রীয় মহিলা লীগের নেত্রী ডা. মেরিনা জাহান, ছাত্রলীগের সাবেক ভারপাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাইফুজ্জামান শিখর, কেন্দ্রীয় মহিলা লীগের সভাপতি সাফিয়া খাতুন, সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম বলেন, রবিবার রাত সাড়ে ৮টায় কুমিল্লা সদর আসনের এমপি হাজী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দেড় ঘণ্টাব্যাপী এক বৈঠকে বলেছেন, নেত্রী আমি শেখ মুজিবের আদর্শকে লালন করে রাজনীতি করি। আমি বাহার কখনো বিশ্বাস ঘাতকতা করি নাই। নেত্রী আপনি আমার বোন সীমাকে প্রার্থী দিয়েছেন, আমাকে তার হয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। আমি বাহার আজকে বলে গেলাম- কুমিল্লার মানুষ ভোট দিয়ে আগামী ৩০ মার্চ মেয়র নির্বাচিত করে সীমাকে আপনার কাছে নিয়ে আসবে।
শামীম আরো বলেন, শেখ হাসিনা আপনাকে বলতে চাই আপনি যে মাটিতে হাত দেন? সে মাটি সোনায় রূপান্তরিত হয়। আপনি নারায়ণগঞ্জে বিজয় ছিনিয়ে এনেছেন, আমাদের সহযোগিতায় আপনি কুমিল্লায়ও বিজয় পাবেন।
এসময় আরো বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তার, সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল, কুমিল্লা জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক আলহাজ্ব ওমর ফারুক, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক শফিকুল ইসলাম সিকদার, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা মহিলা লীগের সভাপতি জাবেদা খানম পারুল, যুবলীগ নেতা আবুল কাশেম রওশন, আওয়ামী লীগ নেতা সাজ্জাদ হোসেন স্বপন, যুবলীগ নেতা আরফানুল হক রিফাত, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের সাবেক ভিপি নূর- উর রহমান মাহমুদ তানিম ও আওয়ামী লীগ নেতা কবিরুল ইসলাম সিকদারসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।