পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশনের দারিদ্র্য বিমোচনের নামে সাভার পৌর জামসিং এলাকার ৫০০ গ্রাহকের ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। এসব গ্রাহকের অর্ধেকই এখন ঋণখেলাপি। আমানতকারীরা ঋণের অনূকুলে রাখা সঞ্চয়ের অর্থসহ সর্বস্ব হারিয়ে এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
অথচ তাদের নামে ঋণ নিয়েছেন স্থানীয় প্রভাবশালী, ঋণ বিতরণকারী মাঠ কর্মকর্তা ও পদস্থ কর্মকর্তাদের আত্মীয়স্বজন বা ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা।
ঋণদানকারী এই আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নাম পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশন (ইউপিপিআরপি) ও (ইউএনডিপি), (ডিএফআইডি) এবং (বিজিডি)। সরকারের পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন এই স্বায়ত্ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানটি 'শতভাগ সফল ও স্বয়ংসম্পূর্ণ' বলে দাবি করেছিলেন লিপি আক্তার নামের প্রতিষ্ঠানটির এক কর্মী। এনজিওর কর্মী পরিচয়ে এই লিপি আক্তারই সাধারণ অসহায় দরিদ্র মানুষের নিকট হতে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
গ্রামের গরিব মানুষকে ক্ষুদ্রঋণ দিয়ে স্বাবলম্বী করা এর কাজ হলেও গত সাত বছরের চিত্র এর সম্পূর্ণ বিপরীত। এই সময়ের মধ্যে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে নানা জালিয়াতি হয়েছে, প্রায় অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়েছে কর্তৃপক্ষ। ভুয়া নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে মাঠকর্মীরা কোটি কোটি টাকা ঋণ দিয়েছেন।
ঋণ বিতরণ বেশি দেখিয়ে খেলাপি ঋণ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টাও করা হয়েছে। অনেক কর্মী টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে নিজেরাই ব্যবসা-বাণিজ্য করছেন। ইউপিপিডিআরপি অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষায় এই দুর্নীতি ও লুটপাটের চিত্র বেরিয়ে এসেছে।
খোদেজা নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, এসব এনজিওর কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই। অধিকাংশই ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এতে করে এনজিও পরিচালকরা আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে। আর দরিদ্র নিরীহ মানুষদের শোষণ এবং চাকরির নামে প্রতারণার মাধ্যমে জমজমাট ব্যবসা চালিয়ে, কিস্তির সুদ আদায় করে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা।
প্রতারিত পরিবারের লোকজনদের দাবি, এসব দুর্নীতি, অনিয়ম ও লুটপাট করে গেলেও এসব বন্ধের জন্য প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। তারা এসব দেখেও না দেখার ভান করে থাকেন। এসব অনিয়ম-দুর্নীতি লুটপাট বন্ধে সরকার পদক্ষেপ না নিলে আরও বেশি মানুষ প্রতারিত হতে পারেন।
বিডি প্রতিদিন/১৩ এপ্রিল, ২০১৭/ফারজানা