রাজধানীর উত্তরখানে বাসিন্দা আনসার আলী হত্যার দায়ে তার দুই দুলাভাই শফিকুল ইসলাম ও মকবুল হোসেনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। রবিবার আসামিদের উপস্থিতিতে ঢাকার পরিবেশ আপিল আদালতের বিচারক মশিউর রহমান চৌধুররী এ রায় ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এ এফ এম রেজাউল করিম হীরণ সাংবাদিকদের জানান, সম্পত্তির লোভে পড়ে দুই ভায়রা ভাই মিলেমিশে একমাত্র শ্যালকে ১৯৯৯ সালের ১৮ নভেম্বর খুন করে লাশ গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে। এ ঘটনায় নিহত আনসার আলীর মা বাদী হয়ে রাজধানীর উত্তরা থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন। গ্রেফতারের পরে আসামিরা আদালতে খুনের পরিকল্পনা ও ঘটনার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়।
এ বিষয়ে আদালতের পেশকার মো. মাসুদুর রহমান ভূইয়া জানান, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসমিরা হলেন, নরসিংদী জেলার মনোহরদী থানার পিরপুর এলাকার সোবাহানের ছেলে শফিকুল ইসলাম ওরফে স্বাধীন এবং মাদারীপুর জেলার বাদরপুর মৃগদা এলাকার সাত্তার হাওলাদারের ছেলে মকবুল হোসেন। রায় ঘোষণার সময় আসমিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে আসামিদের সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আসামি মকবুল হোসেন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেছিলেন, আমার শশুরের একমাত্র ছেলে আনসার আলীকে আমি, আমার বড় ভায়রা তোফাজ্জল হোসেন, ছোট ভায়রা শফিক ওরফে স্বাধীন, আমার আপন মামা শ্বশুর সৈয়দ আলী এবং চাচাতো মামা শ্বশুর আমবর আলী মিলে ১৯৯৯ সালের ১৮ নভেম্বর সন্ধ্যা পৌনে ৮টার দিকে স্থানীয় বহরের টেকে নিয়ে খুন করি। আনসার আলী পাগল ছিল। ঘটনার দুই দিন আগে সৈয়দ আলীল বাসায় তার নেতৃত্বে আমরা শলা পরামর্শ করি। সৈয়দ আলী মামা বলে আনসার আলীকে খুন করলে সকল সম্পত্তির মালিক হবে তিনি। আর আমরা ওয়ারিশী ভাগ পাব। অতিরিক্ত আমাকে ও স্বাধীনকে এক লক্ষ করে টাকা দেবে। সে পরামর্শ মতে আমরা আনসার আলীকে মারার জন্য বহরের টেকে যাই। সৈয়দ মামা আনসার আলীকে বহরের টেকে নিয়ে যায়। এরপর তোফাজ্জল হোসেন আনসার আলীর অণ্ডকোষ চেপে ধরে। সৈয়দ আলী গলা চেপে ধরে। আমবর আলী পা চেপে ধরে। স্বাধীন হাত ধরে রাখে। আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম। নিষেধ করে বলেছি, এভাবে মাইরেন না, মারতে হয় তো আঘাত করে মারি। কিন্তু ওইভাবে সবাই ধরায় আনসার আলী মরে যায়। পরে সবাই মিলে তার পরনের কাপড় দিয়েই ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেই। পরে সৈয়দ আলী মামা আমাকে আর স্বাধীনকে পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে বলে পালিয়ে যা, নইলে পুলিশে ধরবে। পরে সৈয়দ আলী মামার কাছে টাকা চাইলে সে টাকা না দিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দেয়।
বিডি-প্রতিদিন/২১ মে, ২০১৭/মাহবুব