জাতীয় প্রেস ক্লাবে কথা সাহিত্যিক শওকত আলীর স্মরণে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে দিনাজপুর সাংবাদিক সমিতির আয়োজনে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়।
দিনাজপুর সাংবাদিক সমিতির আহ্বায়ক মর্তুজা হায়দার লিটনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মিজানুর রহমানের সঞ্চালনায় প্রবন্ধ পাঠ করেন কবি ও কথাসাহিত্যিক মুজতবা আহমেদ মুরশেদ।
এসময় বক্তারা বলেন, কালজয়ী কথাসাহিত্যিক শওকত আলী তার সাহিত্যে প্রান্তিক মানুষের কথা বলেছেন। প্রতিবাদের মাধ্যমে কীভাবে তাদের অধিকার আদায় করে নিতে হয় সে কথাও সাহিত্যে তুলে এনেছেন। তার সাহিত্যে বাঙালি জীবনের প্রতিটি ধাপ চিত্রিত হয়েছে। রাজনীতি বলতে শওকত আলী বুঝতেন অন্যায়ের প্রতিবাদ করা।
তারা আরো বলেন, এত বড় একজন লেখক হয়েও তিনি ছিলেন নিভৃতচারী। তার লেখায় তিনি বিভিন্ন সময়ের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেছেন। বিশেষ করে ৬০ এর দশকে পূর্ব বাংলার জীবন তার সাহিত্যে অমূল্য সম্পদ। নতুন প্রজন্মকে জানিয়ে দিয়েছেন সেই সময়ের দিনগুলোর কথা। আরো তুলে ধরেছেন বাংলার মাটি ও মানুষের নানা কথা। তার চিন্তা-ভাবনা ও লেখনী ছিল সমাজের নিম্নস্তরের মানুষের জন্য।
অনুষ্ঠানে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, তিনি ছিলেন প্রথম সারির সাহিত্যিক। তার উপন্যাসের মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম আমাদের উত্তাল দিনগুলোর ইতিহাস জেনেছে। তিনি সারা বাংলা সাহিত্যের জন্য অনেক অবদান রেখে গেছেন, যা প্রান্তিক মানুষের মন জয় করেছে। মুক্তিযুদ্ধের পর আমাদের হতাশার দিনগুলো তিনিই তুলে ধরেছিলেন।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার বলেন, মাঠের মানুষের জন্য যে দরদ ছিল তা তার সাহিত্যে ফুটে উঠেছে। আমরা তার সাহিত্য পাঠ করে তাকে আরো ভাল করে চেনার চেষ্টা করব।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও প্রাক্তন সেনাপ্রধান লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘শওকত আলী ছিলেন ব্যতিক্রমধর্মী একজন লেখক। যারা প্রান্তিক মানুষ তাদের কথাই তার সাহিত্যে ওঠে এসেছে। তিনি বিশ্বসভায় বাংলাকে পরিচিত করেছেন। সকলকে সমানভাবে দেখার বিষয়টি তার লেখায় বারবার উঠে এসেছে। ভিন্ন আঙ্গিক, প্রান্তিক মানুষের কথা বলেছেন যাদের আমরা অপাঙক্তেয় করে রেখেছি।
নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ বলেন, শওকত আলীর সাহিত্যের শক্তি কখনো প্রচারে আসেনি। তিনি একটি উপন্যাস সৃষ্টি করতে একটি ভাষা তৈরি করেছিলেন। কিন্তু শওকত আলীকে চেনাতে গণমাধ্যমের ভূমিকা নগণ্য।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন দিনাজপুর সরকারি কলেজের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ও কথাসাহিত্যিক ড. মাসুদুল হক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের গবেষক শাফিক আফতাব প্রমুখ। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন শওকত আলীর ছেলে আসিফ শওকত কল্লোল ও তার স্ত্রী ফারজানা শওকত, দিনাজপুর সাংবাদিক সমিতি, ঢাকার বিভিন্ন সদস্য ও দিনাজপুর ছাত্রকল্যাণ সমিতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃবৃন্দ।
বিডি প্রতিদিন/২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/হিমেল