বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বরিশালে ৭ এপ্রিলের বিভাগীয় সমাবেশকে সামনে রেখে নেতাকর্মীদের গণগ্রেফতারের অভিযোগ করা হয়েছে। কোন ধরনের উস্কানি ছাড়াই সমাবেশ বাঞ্চাল করতে পুলিশ নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি হানা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন মহানগর বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জিয়াউদ্দিন সিকদার জিয়া।
এদিকে সমাবেশের মাত্র ২৪ ঘন্টা বাকি থাকলেও এখন পর্যন্ত পুলিশ সমাবেশের স্থান নির্ধারণ করে না দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিএনপি কেন্দ্রিয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আ ক ন কুদ্দুসুর রহমান। যেকোনো মূল্যে বরিশাল নগরীতে বিভাগীয় সমাবেশ সফল করার কথা বলেন তিনি।
এ ব্যাপারে জিয়াউদ্দিন সিকদার জিয়া বলেন, ৭ এপ্রিল বিভাগীয় সমাবেশের অনুমতি এবং সহযোগীতা চেয়ে ১৪ মার্চ পুলিশ কমিশনারের কাছে আবেদন করা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে সমাবেশের স্থান নির্ধারণসহ কোন ধরনের সহযোগীতা না করে উল্টো বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি হানা দিচ্ছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে কোতয়ালী বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন লাবু, মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মশিউর রহমান মঞ্জু এবং ৪ নম্বর যুবদল নেতা মো. মনিরকে আটক করে। এছাড়াও পুলিশ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাককর্মীদের বাসায় হানা দিয়ে আতংকের সৃষ্টি করেছে বলে অভিযোগ করেন জিয়া। পুলিশের গ্রেফতার এড়াতে নেতাকর্মীরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলেও তিনি জানান।
এদিকে বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও উত্তর জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আ ক ন কুদ্দুসুর রহমান বলেন, দলীয় চেয়ারপার্সনের মুক্তির দাবিতে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ আহ্বান করেছে বিএনপি। শান্তিপূর্ণ সমাবেশে সহযোগীতা না করে উল্টো সরকারি দলের হয়ে কাজ করছে পুলিশ। তিনি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে বিএনপি’কে সুবিধাজনক একটি স্থানে সমাবেশের অনুমতি দেওয়ার জন্য মেট্রোপলিটন পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাসহ সরকারের কাছে দাবি জানান।
বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক এমপি বিলকিস জাহান শিরিন বলেন, বিএনপি যেকোন মূল্যে বরিশালে পূর্ব নির্ধারিত সমাবেশ সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। দলীয় চেয়ারপার্সনের প্রতি নেতাকর্মীদের আবেগ এবং দলের প্রতি দায়িত্ববোধের কারনেই ওইদিন ব্যাপক জনসমাগম হবে বরিশালে। এটা অন্যান্য জনসভা কিংবা সমাবেশের মতো নয়। সরকারের উচিৎ এই সমাবেশে সহযোগীতা করা। জনতার ঢল নামলে ৭ এপ্রিলের সমাবেশ ঠেকানোর সাধ্য অবৈধ সরকারের নেই বলে হুঁশিয়ারি দেন সাবেক এমপি শিরিন।
গত বৃহস্পতিবার বরিশালে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব সাবেক মেয়র অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার বলেন, বেগম জিয়ার মুক্তির আন্দোলনে লাখো মানুষের সমাগম হবে। ওইদিন পুরো বরিশাল হবে সমাবেশের নগরী। স্থান নির্ধারণ নিয়ে জটিলতা থাকলে ওইদিন বরিশালের পরিস্থিতি অন্যরকম হতে পারে। সে রকম কোন অনাকাংখিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে এর দায়-দায়িত্ব মেট্রোপলিটন পুলিশ তথা সরকারকে নিতে হবে বলে সাফ জানিয়ে দেন ৪ বারের সাবেক এমপি সরোয়ার।
মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) গোলাম রউফ খান শুক্রবার দুপুরে বলেন, বিএনপি’র সমাবেশের অনুমতি এবং স্থান নির্ধারনের বিষয়টি পুলিশ কমিশনারের আলোচনার টেবিলে রয়েছে। জনভোগান্তি রোধে বিএনপি’কে মূল শহরের বাইরে কোথাও সমাবেশ আয়োজনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু তারা রাজি হয়নি। শহরের মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ যেকোন ধরনের বিশৃঙ্খলঅ রোধে পুলিশ সতর্ক থাকবে বলেও জানান উপ-কমিশনার রউফ খান।
বিএনপি’র সমাবেশ বাঞ্চাল করতে নেতাকর্মীদের গনগ্রেফতারের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, যাদের নামে বিভিন্ন মামলার ওয়ারেন্ট আছে তাদের গ্রেফতার করছে পুলিশ।
বিডি প্রতিদিন/৬ এপ্রিল ২০১৮/ওয়াসিফ