মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে শোকরিয়া আদায়ের মাধ্যমে প্রায় অর্ধ লক্ষ ধর্মপ্রাণ মুসল্লির উপস্থিতিতে জেলা শহর নারায়ণগঞ্জে এই প্রথমবারের মতো বৃহৎ ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের উদ্যোগে এই বৃহৎ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। নামাজ শেষে মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও কল্যাণ কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
বুধবার সকাল সাড়ে ৮টায় শহরের ইসদাইর এলাকায় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরাতন সড়কের উত্তর পাশে একে এম সামছুজ্জোহা স্টেডিয়াম এবং দক্ষিণ পাশে কেন্দ্রীয় ঈদগাহ সমন্বয়ে এ ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন নগরীর চাষাঢ়া নূর মসজিদের খতিব মো. আব্দুস সালাম।
নামাজের শেষে খতিব মো. আব্দুস সালাম দেশ জাতি ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনায় বিশেষ মোনাজাত করেন। এসময় গুনাহ মাফের জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন মুসল্লিরা। জামাত পূর্বে শামীম ওসমান বলেন, ইসলামি চিন্তাবিদ ও আলেমদের পরামর্শে সহীভাবে জামাতের আয়োজন করা হয়েছে। আমি আল্লাহকে রাজী-খুশী করতে এই উদ্যোগ নিয়েছি। আপনারা আমার নেত্রী শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করবেন। আরও দোয়া করবেন আগামীতে যেন এর চেয়ে বৃহৎ ঈদ জামাতের আয়োজন করতে পারি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, একেএম সামছুজ্জোহা স্টেডিয়াম, কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ও ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরাতন সড়কে ঈদের জামাতে অংশ নিতে সকাল ৭টা থেকে আসতে শুরু করে মুসল্লিরা। প্রথমে ঈদগাহ মাঠ ভরে গেলে সামছুজ্জোহা স্টেডিয়ামে জামাজের কাতারে দাঁড়িয়ে যায় মুসল্লিরা। স্টেডিয়ামও পূর্ণ হয়ে গেলে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরাতন সড়কে দাঁড়িয়ে জামাতে অংশ নেয় মুসল্লিরা।
প্রথমবারের মতো বৃহৎ এ জামাতে অংশ নেন নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক রাব্বী মিয়া, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. রেজাউল বারী, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট ওয়াজেদ আলী খোকন, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি খালেদা হায়দার খান কাজল, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, আদালতের নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েল, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সহ সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস, নাসিম ওসমান স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সভাপতি লিমন হোসেনহ প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, গত রোজার ঈদ জামাতে অব্যবস্থপনার কারণে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয় নারায়ণগঞ্জের মুসল্লিদের। সেই সময় শামীম ওসমান ওই ঈদ জামাতে অংশগ্রহণ করলে মুসল্লিরা তাকে ঘিরে ধরে নানা অভিযোগ করেন। পরে শামীম ওসমান সবাইকে আশ্বাস দেন এইবার কোরবানি ঈদে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জে বৃহৎ ঈদ জামাতের উদ্যোগ নেবেন। এর মধ্যে শামীম ওসমান জেলায় বিভিন্ন মসজিদের ঈমাম ও ওলামাদের নিয়ে জেলায় ঈদ জামাতের আয়োজনে পরামর্শে বসেন। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় আলেমদের পরামর্শে তারা যেভাবে বলবেন সেইভাবে বৃহৎ ঈদ জামাতের উদ্যোগ নেওয়া হবে।পরে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি শামীম ওসমানের তত্ত্বাবধানে ও নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এবারই স্টেডিয়াম ও ঈদগাহে এক সঙ্গে নামাজের জামাতের আয়োজন করা হয়। ফলে এখানে প্রায় অর্ধ লক্ষ মুসল্লি নামাজ আদায় করেন।
এদিকে, এ বৃহৎ জামাতকে কেন্দ্র করে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয় প্রশাসন। সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত শৃংখলা রক্ষায় পুলিশের পাশাপাশি, র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কাজ করে। পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী শুধু মাত্র জায়নামাজ ছাড়া অন্য কিছু নিয়ে ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। এছাড়াও প্রত্যেকের তল্লাশির জন্য ছিল অত্যাধুনিক সব মেশিন। ফলে ৯টায় জামাত শেষে শান্তিপূর্ণ ভাবে ফিরে যায় মুসল্লিরা।
বিডি প্রতিদিন/ ২২ আগস্ট ২০১৮/ ওয়াসিফ