বকেয়া মজুরি পরিশোধের দাবিতে খুলনা অঞ্চলের ৯টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। একই সঙ্গে তারা খালিশপুর বিআইডিসি রোডে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করেছেন।
সোমবার সকাল ৬টায় মিলের কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তাতে শ্রমিকরা যোগ দেননি। সকাল সাড়ে ৮টায় তারা স্ব-স্ব মিল গেটে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ ও মতবিনিময় করেন।
এছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিক সিবিএ-নন সিবিএ ঐক্য পরিশোধ সোমবার বেলা ১১টায় জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছে। ওই বৈঠকে আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
জানা যায়, রবিবার দুপুর আড়াইটার দিকে প্রথমে খালিশপুর স্টার জুট মিলের শ্রমিকরা উৎপাদন বন্ধ করে দেন। এরপর সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত প্লাটিনাম, ক্রিসেন্ট, দৌলতপুর, জেজে আই ও কার্পেটিং পাটকলের উৎপাদন বন্ধ করে দেয়া হয়। আর সোমবার সকাল থেকে একই সঙ্গে ৯টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।
পাটকল শ্রমিক লীগের খুলনা-যশোর অঞ্চলের আহ্বায়ক মো. মুরাদ হোসেন বলেন, পাট মন্ত্রণায়লয় ও বিজেএমসি’র সঙ্গে বৈঠকে ২৫ এপ্রিলের মধ্যে পাটকল শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পরিশোধের কথা বলা হয়। কিন্তু এ পর্যন্ত মজুরি প্রদান করা হয়নি। মজুরি না পেয়ে শ্রমিকরা পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। এ কারণে ক্ষিপ্ত শ্রমিকরা মিলের উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে।
জানা যায়, বকেয়া মজুরি পরিশোধ এবং মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ৯ দফা দাবিতে গত ২ এপ্রিল থেকে পাটকলে ৭২ ঘণ্টার ধর্মঘট পালন করেন শ্রমিকরা। এরপর ১৫ এপ্রিল থেকে টানা ৯৬ ঘণ্টার ধর্মঘট শুরু হলেও শ্রম প্রতিমন্ত্রী ও বিজেএমসি চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠকে তারা দাবি মেনে নেয়ায় ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পরিশোধ করা হয়নি।
বিজেএমসি’র খুলনা আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ৯টি পাটকলে শ্রমিকদের ৮ থেকে ১১ সপ্তাহের মজুরি এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ৪ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। সব মিলিয়ে বকেয়া পাওনার পরিমাণ প্রায় ৬৫ থেকে ৭০ কোটি টাকা। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি পাটকলে স্থায়ী শ্রমিক রয়েছেন ১৩ হাজার ১৭০ জন এবং বদলি শ্রমিকের সংখ্যা ১৭ হাজার ৪১৩ জন।
বিডি প্রতিদিন/কালাম