সরকারি প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক স্বাভাবিক প্রসবে অনিহা, কম বয়সে মা হওয়া ও প্রসব পরবর্তী পরিবার পরিকল্পনা (পিপিএফপি) গ্রহণ না করায় মাতৃমৃত্যুর হার কমনো যাচ্ছে না। দেশে এখনো প্রসবকালে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ৩১ শতাংশ, খিঁচুনিতে ২১ শতাংশ ও প্রসব জটিলতায় ৭ শতাংশ প্রসূতির মৃত্যু হয়। শুধুমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক স্বাভাবিক প্রসব নিশ্চিত করা গেলে ৮০ শতাংশ মাতৃমৃত্যু কমানো সম্ভব।
আজ মঙ্গলবার খুলনায় পরিবার পরিকল্পনা ও সেবার মান উন্নয়ন বিষয়ক সেমিনারে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা এসব কথা বলেন। বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান রিপ্রোডাকটিভ হেলথ সার্ভিসেস ট্রেনিং অ্যান্ড এডুকেশন প্রোগ্রাম (আরএইচস্টেপ) এই সেমিনারের আয়োজন করে।
সেমিনারে বলা হয়, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো’র ২০১০ সালের জরিপে প্রতি ১ লাখ শিশুর জন্ম দিতে গিয়ে ১৯৪ জন মায়ের মৃত্যুর কথা বলা হয়। ওই বছর ৭ হাজার ৩৩২ মায়ের মৃত্যু হয়। এই হার ছিল আগের দুই দশক ধরে মাতৃমৃত্যু কমে আসার ধারাবাহিকতা। তবে ২০১৫ সালের পর থেকে তা’ আবারো বাড়ছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্বাভাবিক প্রসবের ক্ষেত্রে ১ শতাংশ মৃত্যুহার কমলেও সিজারের কারণে ৭ শতাংশ মৃত্যুহার বেড়েছে।
পরিবার-পরিকল্পনা অধিদফতর যশোর বিভাগীয় উপ-পরিচালক মো. সামছুল আলম বলেন, অনেক জায়গায় অদক্ষ সার্জন, প্রশিক্ষণহীন স্বাস্থ্যকর্মী প্রসব সেবা দিচ্ছেন। সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে প্রাতিষ্ঠানিক নরমাল ডেলিভারি বাড়ানো গেলে সিজারের সংখ্যা কমিয়ে আনা যাবে। শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক ডেলিভারির কারণে রক্তক্ষরণের মৃত্যু ঝুঁকি ৮০ শতাংশ কমিয়ে আনা সম্ভব। এ ব্যাপারে মাঠ পর্যায়ে কর্মরত পরিবার কল্যাণ কর্মীদের আরো বেশি প্রচার ও মায়েদের সচেতন করতে হবে।
পরিবার-পরিকল্পনা অধিদফতর খুলনা’র বিভাগীয় উপ-পরিচালক মো. আব্দুল আলীম বলেন, বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতে স্বাভাবিক প্রসবের তুলনায় সিজারের প্রতি আগ্রহ বেশি দেখা যায়। এক্ষেত্রে মাতৃমৃত্যুহার বাড়ছে। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন আরএইচস্টেপ’র নির্বাহি পরিচালক কাজী সুরাইয়া সুলতানা। বক্তৃতা করেন পরিবার-পরিকল্পনা অধিদফতর, খুলনা বিভাগীয় পরিচালক শরিফুল ইসলাম, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এটিএম মঞ্জুর মোর্শেদ, খুলনা সিভিল সার্জন এএসএম আব্দুর রাজ্জাক, খুমেক হাসপাতালের গাইনি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সামছুন্নাহার লাকি।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক