ঝোঁপঝাড় নিয়মিত পরিস্কার না করায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগসহ বেশিরভাগ ওয়ার্ডের আশপাশ এখন অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় আছে। হাসপাতালের কর্মরত ও চিকিৎসা নিতে আসা রোগী স্বজদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন থেকে ঝোঁপঝাড় থাকলেও তা পরিস্কারের কোনো উদ্যোগ নেই। তবে মাঝেমধ্যে পরিস্কার হয় নামেমাত্র।
হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও ওয়ার্ডগুলোর আশেপাশে সরেজমিনে গিয়ে এমন চিত্রই দেখা গেছে। বহির্বিভাগের শিশু বিভাগে গিয়ে দেখা যায়, বড় বড় জঙ্গলে গ্রিলের দুইপাশ ঘিরে আছে। বহির্বিভাগের গাইনি, অনকোলজি, নাক কান গলা, রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিংসহ বহির্বিভাগ ও অনেক ওয়ার্ডের ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে দীর্ঘদিন থেকে। মাঝে পরিচালকের রুমের সামনে পেছনে পরিস্কার থাকলেও বাকি জায়গাগুলো পরিস্কার করা হচ্ছে না। এমন অবস্থায় ক্ষোভ জানিয়েছে নাম না প্রকাশে হাসপাতালের কর্মরত চিকিৎসক-কর্মকর্তা ও চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনরা।
তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, হাসপাতালে যে পরিমাণে পরিচ্ছন্ন কর্মী দরকার তার তুলনায় অনেক কম। ফলে নিয়মিত পরিস্কারের কাজ করা যাচ্ছে না।
হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার অফিস সূত্রে জানা যায়, গোটা হাসপাতালের পরিস্কারের জন্যে কর্মী আছে ১২০ জন। এর মাঝে আয়া ২০ জন, নিরাপত্তা কর্মী, ওয়ার্ড বয়, ট্রলিম্যান, অফিস সহকারি। মাত্র চারজন ঝোঁপঝাড় পরিস্কার করে থাকে। আর সিটি কপোরেশনে থেকে দুইজনকে দেওয়া হয়। তবে সব ওয়ার্ডের ঝোঁপঝাড় পরিস্কার করতে কর্মী প্রয়োজন ১৮ থেকে ২০ জন।
নাম না প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন চিকিৎসক ও কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা নিয়মিত হাসপাতালে থাকি। এমন ঝোঁপঝাড় দেখে আমাদেরও অনেক খারাপ লাগে। কিছুদিন আগেও যেমনভাবে ডেঙ্গুর প্রকোপ ছিলো ওই সময়ও তেমনভাবে পরিস্কার হয়নি ঝোপঝাড়। এর আগে সিটি মেয়র এসে এমন পরিবেশ দেখে হাসপাতাল নিয়মিত পরিস্কার করতে বলেছেন।’
বহির্বিভাগের চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর স্বজন তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘শিশু বিভাগের ভিতরে এমন পরিবেশ দেখে অবাক হয়ে গেলাম! এতো বড় বড় জঙ্গল এখানে। প্রতিদিন অভিভাবক ও হাজারো শিশু চিকিৎসা নিতে আসে, আর এই জায়গার পরিবেশটা এমন! এখানে তো রোগ জীবাণু আরো ছড়িয়ে পড়বে।’
বহির্বিভাগে শিশুর চিকিৎসা নিতে এসেছেন আঞ্জুমান আরা। তিনি বলেন, শিশু বিভাগের আশেপাশে এমন পরিবেশ আগে জানলে হাসপাতালে আসতাম না। ভয় হচ্ছে, এখন না জানি নতুনভাবে আমার অসুস্থ বাচ্চাটা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত না হয়। এখানে ঝোঁপঝাড় কেটে ফুলের গাছ লাগানো উচিত।
রামেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক সাইফুল ফেরদৌস বলেন, ‘সিটি কপোরেশন থেকে দুইজন কর্মী ও হাসপাতাল থেকে কিছু কর্মী দিয়ে চলছে ঝোঁপঝাড় পরিস্কারের কাজ। তবে এবার দরপত্রের মাধ্যমে পরিচ্ছন্ন কর্মী নেওয়া হচ্ছে। কর্মী নিয়োগ হলে আশা করা যাচ্ছে, আগের চেয়ে পরিস্কারের কাজ অনেক ভালো হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল