ভবঘুরে এবং অসহায়দের ভরসার জায়গা কলাবাগান থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মনসুর হোসেন মানিক। তবে একটু নিভৃতচারী, প্রচার-প্রচারণা থেকে একটু দূরে থাকাই তার স্বভাব। তবে চলমান করোনা মহামারিতে অসহায় মানুষের জন্য তার কর্মকাণ্ড চোখ এড়াতে পারেনি গণমাধ্যম কর্মীদের।
দেখা গেছে, প্রায় প্রতিরাতেই ডিউটির ফাঁকে মানিকের চোখ খুঁজে বেড়ায় ছিন্নমূল, প্রতিবন্ধী এবং ভবঘুরেদের মতো পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠির সদস্যদের দিকে। সামর্থ্য অনুযায়ী ওইসব মানুষদের মানিক পৌঁছে দিচ্ছেন খাবার, মাস্ক এবং স্যানিটাইজার। তবে তার সহকর্মীদের কাছ থেকে জানা গেল, অসহায় মানুষকে সামর্থ্য অনুযায়ী সাহায্য করা মানিকের দীর্ঘদিনের অভ্যাস।
নিজের বেতনের টাকাতেই তিনি এসব করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। চলমান সময়েও কাউকে হাসপাতালে নেয়ার প্রয়োজন হলে ওষুধ বা নগদ টাকা- সবটুকুই তিনি তার সাধ্যমতো সরবরাহ করে আসছেন। আর এর সবটুকুই তার বেতনের টাকায়।
গত সোমবার রাত দেড়টার দিকে এসআই মানিককে দেখা যায়, পান্থপথ পানি ভবনের সামনে এক ভবঘুরেকে মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিচ্ছেন। কাছে যেতেই নিজেকে আড়াল করার চেষ্টা করলেন মানিক। তবে অন্য প্রসঙ্গে কথা বলার পর তাকে বলা হলো, তার বিষয়টি প্রচার করলে অন্যরাও তো এমন কাজে উৎসাহিত হতে পারেন। পরবর্তীতে তার কার্যক্রমের কিছুটা শেয়ার করলেন এই প্রতিবেদকের সঙ্গে।
জানা গেল, কিছু সময় আগেই রাসেল স্কয়ার এলাকায় ফুটপাতে থাকা ২০ জনকে দিয়েছেন আপেল, পাউরুটি, বিশুদ্ধ পানি ও মাস্ক। এসআই মানিক বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের সহ-প্রচার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এসআই মানিক বলছিলেন, করোনার বাইরেও প্রতিদিন পারলে ১০ থেকে ১৫ জন অভুক্ত মানুষকে কিছু হলেও খাবার দেয়ার চেষ্টা করি। মাঝেমাঝে আমার কিছু সহকর্মী আমাকে সহায়তা করেন। ভালোলাগা থেকেই এই কাজটি করা। বর্তমান সময়ে শ্রমজীবী সাধারণ মানুষ ও ভাসমান-ভবঘুরেরা অনেক কষ্টে আছে। পুলিশের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে প্রায় সব ইউনিট থেকে আলাদাভাবে বিভিন্ন সহায়তা করা হচ্ছে। আমাদের কলাবাগান থানা থেকেও সহায়তা দিচ্ছে দুস্থদের।
তবে ব্যক্তিগতভাবে করলে অন্যরকম একটা তৃপ্তি অনুভব করি। আমার পরিবারের সবাই এ বিষয়ে উৎসাহ দেন। সম্প্রতি আমার কিছু পরিচিতজন এ বিষয়ে আমার সঙ্গে শরিক হতে চাইছেন। তবে এখনো আমি এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেইনি।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত