৫ ডিসেম্বর, ২০২০ ২০:৩১

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের বিরোধিতা, প্রতিবাদে গৌরব’৭১ এর মহাসমাবেশ

অনলাইন ডেস্ক

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের বিরোধিতা, প্রতিবাদে গৌরব’৭১ এর মহাসমাবেশ

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ও বাংলাদেশের সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা উচ্ছেদের হুমকির প্রতিবাদে 'মহাসমাবেশে' করেছে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন গৌরব’৭১।

শনিবার বিকালে রাজধানীর ধোলাইরপাড় উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের সহযোগিতায় ছিলেন শেখ রাসেল ফাউন্ডেশন ইউএসএ (বাংলাদেশ শাখা)।

মহাসমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী  আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস এমপি, সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দীন চৌধুরী মানিক। 

উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা নাছির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, ঢাকা ৫ আসনের সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলাম, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য এ্যাডভোকেট সানজিদা খানম, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্যাইবুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নির্মল রোজারিও, আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি বাবু নির্মল রঞ্জন গুহ এবং সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক  আফজালুর রহমান বাবু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খায়রুল হাসান জুয়েল প্রমুখ।

গৌরব'৭১ এর সভাপতি এসএম মনিরুল ইসলাম মনির সভাপতিত্বে এবং সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক এফএম শাহীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন গৌরব'৭১ এর সহ সভাপতি হাবিবুর রহমান রোমেল, শেখ রাসেল (ইউএস ইঙ্ক) এর রবিউল ইসলাম রূপম, আওয়ামী নেতা নেহেরীন মোস্তফা দিশি, ঢাকা দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কামরুল হাসান রিপন, ঢাকা -৪ ও ৫ এর সকল ওয়ার্ডের কাউন্সিলরবৃন্দ, ঢাকা ৪ এর সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকবৃন্দ, বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ, বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ, বিশিষ্ট রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবিসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী  আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক এমপি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরোধীতা কখনো সহ্য করা হবে না। বঙ্গবন্ধুর দেশে তার ভাস্কর্য হবেই, এতে কোন সন্দেহ নাই।

তিনি বলেন, এ উপমহাদেশে আলেমগারী কিছু ভণ্ড আছে। যারা একসময় ইংরেজি ভাষাকে হারাম বলে মুসলমানদের পিছিয়ে দিলেন। একাত্তরেও কিছু ভাড়াটিয়া আলেম ফতোয়া দিল পাকিস্তান ভাঙলে ইসলাম ভেঙে যাবে। আজকে আবার ফতোয়া দেয়া হলো, ভাস্কর্য নাজায়েয। আমি বাবুনগরীদের কাছে বিনয়ের সাথে প্রশ্ন রাখতে রাখতে চাই, আপনারা আগের ফতোয়াবাজধারীদের মতো। আমার ধারণা আপনারা তাদেরই উত্তরসূরী। আপনারা ধর্মকে সামাজিক কাজের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করাতে চান।ধর্মকে পুঁজি করে মানুষকে বিভ্রাম্ত করতে চান। 

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বিরোধিতাকারীদের হুশিয়ারি দিয়ে মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে আমরা একাত্তরে অস্ত্র জমা দিয়েছি কিন্তু ট্রেনিং জমা দেয় নাই। আপনারা বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে কথা বলবেন আমরা কি আপনাদের চুমো দেবো? না বুঝে ভাস্কর্য নিয়ে বলে থাকলে ক্ষমা চান, আর যদি জেনেশুনে বলে থাকেন তাহলে পরিণতির জন্য প্রস্তুত থাকেন।

মন্ত্রী আরো বলেন, আরে ভাস্কর্য তো আপনাদের শানের পাকিস্তানেও আছে। অধিকাংশ মুসলিম দেশে ভাস্কর্য আছে। আমি হালাল-হারামের কথায় বাদই দিলাম। আমার প্রশ্ন, সব মুসলিম দেশে যদি ভাস্কর্য থেকে থাকে তাহলে বাংলাদেশে থাকতে দোষ কি? আসল কথা হলো আপনারা বঙ্গবন্ধুকে সহ্য করতে পারেন নাই। কারণ বঙ্গবন্ধুর কারণে আপনাদের পাকিস্তান টিকে নাই।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দীন চৌধুরী মানিক বলেন, এ দেশে থাকতে হলে বঙ্গবন্ধুকে মেনে থাকতে হবে। তার ভাস্কর্য এদেশের মোড়ে মোড়ে হবে। এটা তোমাদের মেনে নিতে হবে।

মামুনুল হক ও ফয়জুল করিমকে উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তোমরা বলেছো বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বুড়িগঙ্গায় ভাসিয়ে দিবা। কিন্তু সে কাজ করতে আসলে এ দেশের মুক্তিকামী মানুষ তোমাদের বঙ্গোপসাগরে ফেলে দিবে।

 বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন
 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর