সিলেটে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপে উদ্ধার হয়েছে প্রায় ৩০ একর সরকারি জমি। যার মূল্য কয়েক শ কোটি টাকা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেট শহরতলীর খাদিমপাড়া ইউনিয়নে সরকারি ভূমি লিজ নিয়ে গড়ে উঠেছে বিশাল খাদিমনগর চা বাগান। দীর্ঘদিন ধরে চা বাগানের সমতল জায়গা দখল করে আসছিল স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র। বাগানের কর্মকর্তা, জাল দলিলের কারিগর ও স্থানীয় দখলদাররা মিলে সরকারি জায়গা দখল শুরু করে। জাল দলিল সৃজন করে তারা প্লট আকারে জায়গা বিক্রি করে। মাঝেমধ্যে চা বাগান কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়রা জালিয়াতির বিরুদ্ধে কথা বললেও প্রভাবশালীদের হয়রানির মুখে থেমে যেতে হয়।
সূত্র জানায়, কম মূল্যে জায়গা পেয়ে অনেকে জেনেশুনেও জাল দলিলমূলে চা বাগানের সরকারি জায়গা ক্রয় করেন। এরপর তারা সেখানে গড়ে তুলেন বাসাবাড়ি। কেউ নিজে বসবাস করেন, আবার কেউ দিয়ে দেন ভাড়া। আবার কেউ জালিয়াত চক্রের কাছ থেকে স্বল্পমূল্যে জায়গা ক্রয় করে প্লট আকারে পুনঃবিক্রিও করেন।
গত আগস্টের মাঝামাঝি সিলেটের জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগদান করেন র্যাবের একসময়ের আলোচিত ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি আলোচিত সাদাপাথর লুট বন্ধ ও উদ্ধারসহ নানান কাজে প্রশংসিত ভূমিকা রাখেন। গত শুক্রবার তিনি খাদিমনগর চা বাগান পরিদর্শনে গিয়ে অবৈধ দখলে থাকা সরকারি ভূমি উদ্ধারের নির্দেশ দেন। জেলা প্রশাসকের উপস্থিতিতে ওই সময় বাগ্বিতণ্ডায় জড়ানো জালিয়াত চক্রের সদস্য মোজাম্মেল হোসেন লিটনকে ১ বছরের কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এদিকে গত শনিবার সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খোশনুর রুবাইয়াতের নেতৃত্বে দিনভর অভিযান চালানো হয়।
অভিযানকালে ৩০টি স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিয়ে উদ্ধার করা হয় প্রায় ৩০ একর সরকারি ভূমি। এ সময় একটি ঘরের ভিতর থেকে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার করা হয়। অভিযানকালে জালিয়াত চক্রের মূলহোতা খাদিমনগর চা বাগানের সাবেক ব্যবস্থাপক মোসাদ্দেক হোসেন কোরেশী ও তার সহযোগী জাল দলিল সৃজনের হোতা শাহজাহান ওমরকে আটক করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত তাদের ১ বছরের সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠান। খোশনুর রুবাইয়াৎ জানান, দখলদাররা খুবই প্রভাবশালী। উচ্ছেদ অভিযানের সময় তারা প্রশাসনকে বাধা দিতে চেয়েছেন। পরে ভূমি আইনে উচ্ছেদ ও জালিয়াত চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।