২৩-২৪ মার্চ পঞ্চম উইমেন লিডারশিপ সামিট এবং ষষ্ঠ ইন্সপায়ারিং উইমেন অ্যাওয়ার্ড গালা ইভেন্টের মাধ্যমে উইল ফেস্ট ২০২১ সমাপ্ত হয়েছে। ‘সেলিব্রেটিং ওমেন অফ বাংলাদেশ: ভয়েস. ভিশন. ভিভিড.’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে পুরো ফেস্টটি ভার্চুয়ালি আকারে অনুষ্ঠিত হয়েছে, যা বাংলাদেশের নারীদের তাদের সাহসী ও দূরদর্শী নেতৃত্বের মাধ্যমে অবিস্মরণীয় পরিবর্তন আনয়ন ও চলমান অবস্থাকে চ্যালেঞ্জকারীদের অনুপ্রেরণা, স্বীকৃতি এবং উদযাপন করে।
উইমেন ইন লিডারশিপের (উইল) যাত্রাটি ৭ বছরের। উইল’র লক্ষ্য বিভিন্ন পেশার নারীদের তাদের সম্ভাবনার শীর্ষে পৌঁছে দেওয়া এবং ব্যতিক্রমী নারী ব্যক্তিত্ব ও পেশাদারদের স্মরণে উদ্দীপ্ত করা। উইল বেশ কয়েকটি উপ-প্রকল্পের আয়োজন করেছে গত ৭ বছরে: উইমেন লিডারশিপ সামিট, ইন্সপায়ারিং উইমেন অ্যাওয়ার্ড, বাংলাদেশ উইমেন প্রফেশনালস নেটওয়ার্ক, লীডার্স অফ টুমোরো এবং উইল ম্যাগাজিন।
উইমেন লিডারশিপ সামিটে ইন্টারন্যাশনাল এবং স্থানীয় উল্লেখযোগ্য লিডাররা একত্রিত হন এবং আলোচনায় আনেন নারীর ক্ষমতায়ন, জেন্ডার ইকুয়ালিটি, গ্লাস সিলিং এবং লিঙ্গ বৈষম্যকে ভেঙে দেওয়া এবং পরিবর্তন আনার কথোপকথনকে উৎসাহিত করেন।
পঞ্চম উইমেন লিডারশিপ সামিটের সূচনায় বক্তব্য প্রদান করেন দেশের সর্বাধিক প্রশংসিত ভিজ্যুয়াল শিল্পী, উদ্যোক্তা ও সাংস্কৃতিক প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব নাজিয়া আন্দালিব প্রীমা, প্রেসিডেন্ট, উইমেন ইন লিডারশিপ (উইল), বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের পরিচালক ও ক্রিয়েটিভ সম্পাদক, বাংলাদেশ ক্রিয়েটিভ ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি উইমেন ইন লিডারশিপকে একটি ‘আন্দোলন’ এবং ‘প্রাপ্য অধিকার’ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, ‘উইল বিগত ৭ বছর ধরে বহু স্তরের ইনগেজমেন্টের মধ্য দিয়ে নারী পেশাদারদের হৃদয় এবং আত্মাকে স্পর্শ করার জন্য তার দৃষ্টি অনুসরণ করছে।’
এরপর স্পনসরের মূল্যবান বক্তব্য প্রদান করেন খন্দকার শামীম রহমান, জেনারেল ম্যানেজার, সোশ্যাল মার্কেটিং কোম্পানি (এসএমসি)। তিনি বক্তব্যে বলেন, এসএমসি প্রতিশ্রুতিবদ্ধভাবে নারীদের জন্য আরও উন্নত পরিবেশ তৈরি করার জন্য কাজ করছে এবং সংস্থাটি গর্বিত উইল ফেস্ট ২০২১ এর ইভেন্ট পার্টনার হিসেবে। ২ দিনের সামিটটি পাঁচটি কী নোট সেশন, চারটি প্যানেল ডিসকাশন, একটি ইনসাইট সেশন এবং দুটি অনন্য নারী ক্ষমতায়ন চলচ্চিত্রের সমন্বয়ে গঠিত ছিল।
অনুষ্ঠানের মূল বক্তারা ছিলেন ড. ডেবোরা স্ট্রিটার, ফ্যাকাল্টি, দ্য ব্যাংক অফ আমেরিকা, কর্নেলের ইনস্টিটিউট ফর উইমেনস এন্টারপ্রেনারশিপ, প্রফেসর ইমেরিতা, স্টিভেন এইচ ওয়েইস প্রেসিডেন্সিয়াল ফেলো, চার্লস এইচ ডাইসন স্কুল অফ অ্যাপ্লাইড ইকোনমিকস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট, এস জে জনসন কলেজ অফ বিজনেস; শরিন শাজাহান নাওমি (পিএইচডি), সহকারী অধ্যাপক, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর ওমেন, চট্টগ্রাম; নম্রতা দুবাসী, পার্টনার, ম্যাকিনসি এবং কোম্পানি; আর্তি সুব্রামানিয়ান, সিনিয়র এক্সপার্ট, ম্যাকিনসি এবং কোম্পানি; ডাগমারা সঁজুলসে, গ্লোবাল এক্সেকিউটিভ ডিরেক্টর, ইন্টারন্যাশনাল অ্যাডভারটাইজিং অ্যাসোসিয়েশন; এবং সাক্ষী হান্ডা, হিউমান রিসোর্সেস ডিরেক্টর, ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড।
যথাযথ সময়োপযোগী বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল প্যানেল ডিসকাশনে। আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল বাস্তবতার প্রতিফলন ঘটানোর জন্য নারীদের যথাযথ মিডিয়া প্রতিনিধিত্ব, একাডেমিয়া এবং সকলখানে নারী নেতৃত্ব, এবং করোনা মহামারি চলাকালীন বাড়িতে ও কর্মক্ষেত্রে নারীদের উপর প্রভাব। বিষয় সম্পর্কে জ্ঞাত বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা বিষয়টি সম্পর্কে তাদের মতামত পেশ করেছেন।
পঞ্চম ওমেন লিডারশিপ সামিটের সমাপ্তির পর বহুল প্রতীক্ষিত ৬ষ্ঠ ইন্সপায়ারিং উইমেন অ্যাওয়ার্ড গালা অনুষ্ঠিত হয়। এই অনুষ্ঠানটি এবার ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন সীমান্তের শীর্ষস্থানীয় নারীদের এবং সাম্যের জন্য প্রগতিশীল সংস্থাগুলোকে স্বীকৃতি প্রদান এবং পুরস্কৃত করে।
ইন্সপায়ারিং উইমেন অ্যাওয়ার্ড বিভিন্ন প্রান্তের অসামান্য নারী লীডারদের স্বীকৃতি প্রদানের জন্য উইল-এর এই প্রধান পুরস্কার। ২০২১ ইন্সপায়ারিং উইমেন অ্যাওয়ার্ড ৬ষ্ঠ পুনরাবৃত্তি চিহ্নিত করে। ৬ষ্ঠ ইন্সপায়ারিং উইমেন অ্যাওয়ার্ড স্বীকৃত করে-লীডার্স অফ টুমোরো, ইন্সপায়ারিং ফিমেল প্রফেশনালস ও চেঞ্জমেকারস অফ বাংলাদেশকে। এটি করার মাধ্যমে অ্যাওয়ার্ডটি বাংলাদেশের নারীদের দায়িত্ব নিতে এবং তাদের সম্ভাব্যতাকে উন্মোচন করতে অনুপ্রাণিত করে।
মোট ২১ জন বিজয়ী, ১ জন প্রথম রানার আপ, ১ জন সেকেন্ড রানার আপ এবং ১৮টি বিশেষ সম্মাননা মিলিয়ে ২০টি বিভাগে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
উইমেন ইন লিডারশিপ ফেস্টিভাল (উইল ফেস্ট) ২০২১ জয়া স্যানিটারি ন্যাপকিনের সাথে পার্টনারশিপে উইমেন ইন লিডারশিপ (উইল) এর একটি উদ্যোগ।
বিডি প্রতিদিন/এমআই