৯ মে, ২০২১ ০৪:৩২

‘নিরাপদ ঢাকা শহর’ উদ্যোগের অংশ হিসেবে ইউআরপি’র কর্মশালা

অনলাইন ডেস্ক

‘নিরাপদ ঢাকা শহর’ উদ্যোগের অংশ হিসেবে ইউআরপি’র কর্মশালা

‘নিরাপদ ঢাকা শহর’ উদ্যোগের অংশ হিসেবে আরবান রিলিজিয়েন্স প্রকল্পের (ইউআরপি) আওতায় পেশাদারদের জন্য ওয়েবিনার ও কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। নগর স্থিতিস্থাপকতার ক্ষেত্রে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা গত বৃহস্পতিবার  এ ওয়েবিনারে অংশগ্রহণ করেন।

ভূমিকম্পের সময়ে ঢাকা কেমন ঝুঁকির মুখোমুখি রয়েছে এবং এখানে কী ঘটে, ক্ষয়ক্ষতি প্রতিহত করতে কী করণীয় তা নিয়ে বিষদ আলোচনা হয়।

বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায়। এটি ভারতীয়, ইউরোশীয় ও বার্মা এই তিন গতিশীল বা সম্প্রসারণশীল আন্তঃমহাদেশীয় প্লেটের সংযোগ স্থলে অবস্থিত, যা ঢাকাকে ভূমিকম্পের জন্য অত্যন্ত সংবেদনশীল করে তোলে। অনুমান করা হচ্ছে যেকোনো বড় ভূমিকম্প হলে ঢাকার সমস্ত বিল্ডিংয়ের অর্ধেক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

 আলোচকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুল লতিফ হেলালী, বিশ্ব ব্যাংকের স্বর্ণা কাজী, আরটিআই ইন্টারন্যাশনালের ডা. কিমিরো মেগুরো, মিয়ামোটো ইন্টারন্যাশনালের ডা. কিট মিয়ামোটো, বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ডা. মেহেদী আহমেদ আনসারী এবং অবকাঠামো বিশেষজ্ঞ ডা. রকিব আহসান।

ডিজাস্টার ইমাজিনেশন বা দূর্যোগ কল্পনা সরকারি কর্মকর্তা, পেশাদার, শিক্ষাবিদ এবং সাধারণ জনগণকে দুর্যোগ সম্পর্কে জানান, এর ঝুঁকি হ্রাস করায় করণীয় এবং পুরো বিষয়টিতে জড়িত করার পরিকল্পনার কেন্দ্রবিন্দু। শহুরে স্থিতিস্থাপকতার উন্নতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রথম পদক্ষেপটি হলো শহরটি স্থিতিস্থাপক না হলে কোনো দুর্যোগের সময় কী ঘটবে তা কল্পনা করে রাখা। কেবলমাত্র এই পথেই দুর্যোগ ঝুঁকি রোধে আমাদের যে ভূমিকা পালন করতে হবে তা পুরোপুরি বোঝা যাবে। 

প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মো. হেলালি বলেন, ‘দুর্যোগ সুরক্ষা বাড়ানোর জন্য স্থপতি এবং প্রকৌশলী প্রত্যেকের অংশগ্রহণ প্রয়োজন। সরকার ও নীতি নির্ধারকরা, প্রযুক্তিবিদ, প্রকৌশল ও স্থপতি শিক্ষার্থী, ঠিকাদার, সুশীল সমাজ, ব্যক্তিগত খাত এবং সাধারণ জনগণ সবারই দায়িত্ব রয়েছে। এটি কেবল রাজউকের দায়িত্ব নয়। আমি নিশ্চিত যে দুর্যোগ কল্পনা সবাইকে বুঝতে সাহায্য করবে যে কীভাবে আমাদের আশপাশের পরিবেশ একটি দুর্যোগের মুহুর্তে পরিবর্তিত হবে, এবং কী করণীয়।’ 

আরটিআই ইন্টারন্যাশনালের ডা. কিমিরো মেগুরো বলেন, ‘দুর্যোগ থেকে রক্ষা করার জন্য ঢাকা শহরকে আরও পরিকল্পিত করতে বসবাসকারী জনগণের মানসিকতাও দৃঢ় হতে হবে। এক্ষেত্রে করণীয় একটিই; তা হলো জনসাধারণকে সচেতন করে তোলা। আমরা যদি প্রত্যেকে নিজে ভূমিকম্প বিষয়ে সচেতন হই এবং নিজের পরিবারকে সে বিষয়ে প্রস্তুত করি, তাহলে কিন্তু ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেকটাই কমিয়ে আনা যায়। ভবন তৈরির সময় নির্মাণ বিধিমালা কঠোরভাবে পালন করা, নিয়ম করে নির্দিষ্ট সময় পর পর নিজেদের ভবন পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া, সর্বোপরি জরুরি অবস্থার কথা ভেবে পরিকল্পনা করা উচিৎ। ’

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক গবেষণা প্রতিষ্ঠান, আরটিআই ইন্টারন্যাশনাল ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের অর্থায়নে আরবান রেসিলিয়েন্স প্রকল্পের প্যাকেজ এস-০৬ আরবান রিলিজিয়েন্স ইউনিট (ইউআরইউ) পরিচালনার প্রচারের অংশ হিসেবে ওয়েবিনারের আয়োজন করে।   

উল্লেখ্য যে, ভূমিকম্প মোকাবিলায় নেওয়া ‘আরবান রেজিলিয়েন্স প্রজেক্ট (ইউআরপি) : রাজউক অংশ’ প্রকল্পের সংশোধন আনা হয়েছে। একনেক সভায় অনুমোদনপ্রাপ্ত এ প্রকল্পের আওতায় ঢাকা শহরের একটি সংবেদনশীল মানচিত্র তৈরি করা হবে। যার মাধ্যমে জানা যাবে শহরের কোন এলাকা বা বাড়িটি ভূমিকম্পের কতটুকু ঝুঁকিতে রয়েছে।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর