বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) আয়োজিত অবস্থান-সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, দেশে ‘আধাপেট খাওয়া মানুষের সংখ্যা বাড়ছে’। আয় কমে যাওয়ায় আর নিত্য-পণ্যের দাম বাড়ায় সাধারণ মানুষ সংকটে। এসব মানুষকে বাঁচাতে সারাদেশে পর্যাপ্ত ন্যায্যমূল্যের দোকান ও রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে। অতি দরিদ্রদের নগদ সহায়তা দিতে হবে। শ্রমিকদের পুরো মাসের বেতন দিতে হবে।
সমাবেশে বক্তারা ভাত ও ভোটের অধিকার আদায়ে গণসংগ্রাম গড়ে তুলতে সচেতন দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, মানব মুক্তির জন্য চলমান দুঃশাসনের অবসান ঘটিয়ে বাম গণতান্ত্রিক শক্তিকে ক্ষমতায় আনতে হবে।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর পল্টন মোড়ে সিপিবির দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশের কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কমরেড অধ্যাপক এ এন রাশেদা। বক্তব্য রাখেন পার্টির সাবেক সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক কমরেড রুহিন হোসেন প্রিন্স, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কৃষক নেতা কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন, ক্ষেতমজুর নেতা অ্যাড. আনোয়ার হোসেন রেজা, শ্রমিক নেতা রুহুল আমিন। সভা পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড মানবেন্দ্র দেব।
সভায় কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, আমরা ভাত চাই, ভোটের অধিকার চাই। এজন্য মুক্তিযুদ্ধ করেছি। দীর্ঘ দিন ধরে আমরা এ দাবিতে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছি, হরতালও করেছি। কিন্তু আপনারা জানেন আজকে বাংলাদেশের বাজারের কী অবস্থা। মানুষের ন্যূনতম বেঁচে থাকার জন্য যতটুকু প্রয়োজন সেই ক্রয় ক্ষমতাও তার নাগালের বাইরে চলে গেছে।
শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে কমরেড সেলিম বলেন, চালের দাম বাড়িয়ে দেন তাতে অসুবিধা নেই কিন্তু সাধারণ মানুষের বেতন মজুরি লাখ টাকা করে দেন। কিন্তু আদতে তা হচ্ছে না। মানুষের আয় বরং দিন দিন কমে যাচ্ছে এবং জনজীবন আজ বিপর্যস্ত। তিনি ভাত ও ভোটের অধিকার আদায়ে গণসংগ্রাম বেগবান করার আহ্বান জানান।
সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, মানুষের জীবনের দুরবস্থা দূর করতে হলে পুরো ব্যবস্থা বদল করতে হবে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে মধ্যস্বত্বভোগী চক্র ভাঙতে হলে “উৎপাদক সমবায় ও ক্রেতা সমবায় ব্যবস্থা” গড়ে তুলতে হবে। রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে নিত্যপণ্যের বাফার স্টক গড়ে তুলতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে কমরেড অধ্যাপক এ এন রাশেদা বলেন, বাজার আজ মধ্যস্বত্বভোগী এবং সিন্ডিকেটের দখলে। সরকারের সে বিষয়ে কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। উপরন্তু এদের ওপর ভরসা করেই সরকার টিকে আছে। তিনি এই মধ্যস্বত্বভোগী এবং সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কার্যকর আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তুলে বাম বিকল্প শক্তিকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানান।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এসব দাবিতে গত ১৫ এপ্রিল থেকে জেলা উপজেলা ইউনিয়নে শুরু হওয়া গণঅবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচি চলছে।
আজ ১৬ এপ্রিল সারা দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলা ইউনিয়নে এই দাবিতে কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত