নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মামুন মাহমুদকে ছুরিকাঘাত করার মামলায় বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য গিয়াসউদ্দিনের বাসায় অভিযান পরিচালনা করেছে পল্টন থানা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) দিবাগত রাতে এ অভিযান চালানো হয়।
জানা যায়, ২৫ এপ্রিল পল্টনে জেলা বিএনপির বৈঠক শেষে বের হওয়ার পর কস্তুরি রেস্টুরেন্টের সামনে মামুন মাহমুদকে ছুরিকাঘাত করা হয়। এ ঘটনায় স্থানীয়রা জুয়েল নামে একজনকে আটক করে পুলিশে দেয়। পরে জুয়েলের মোবাইলে কল লিস্ট ও তার দেয়া তথ্যে জেলা ছাত্রদলের সহ সভাপতি সাগর সিদ্দিকিকে আটক করা হয়।
এ ঘটনায় মামুন মাহমুদের স্ত্রী বাদী হয়ে পল্টন থানায় মামলা করলে জুয়েলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ২৭ এপ্রিল তিনদিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। রিমান্ডে জুয়েল গিয়াসউদ্দিনের ছেলে রিফাতের নাম বলেছে বলে পুলিশের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছেন। সেই সূত্র ধরে তাকে ধরতেই এ অভিযান বলে জানা যায়।
একাধিতক সূত্র জানায়, পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে নানা তথ্য দিচ্ছেন জুয়েল। মামুন মাহমুদকে হত্যা চেষ্টার সঙ্গে জড়িত হিসেবে পুলিশের তদন্তে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের ছোট ছেলে গোলাম মোঃ কাউসার ওরফে রিফাতের নাম আসে তদন্তে। রিফাতের হয়ে খুনি ভাড়া করেন তার ঘনিষ্ঠ সহযোগি ফতুল্লার বাসিন্দা মোঃ হৃদয়। আর হামলাকারী মোঃ জুয়েল মীরকে মামুন মাহমুদের অফিস ও তার ছবি দেখিয়ে দেয় জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি সাগর সিদ্দিকী। নাসিকের ২নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর বিএনপি নেতা ইকবাল হোসেন ও সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিনের ব্যক্তিগত সহকারী পল্টু কর্মকার সেদিন দুপুর থেকে ঘটনাস্থলের অদূরে মুক্তাঙ্গনে নিজের মাইক্রোবাসে অবস্থান করছিলেন। ঘটনার পর থেকে কাউন্সিলর ইকবাল ও রিফাত গা ঢাকা দিয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে জুয়েল স্বীকার করে, বিএনপির একজন কর্মী হিসেবে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তার নিয়মিত যাতায়াত ছিল। সেখানে তার সঙ্গে হৃদয়ের পরিচয় হয়। কিছুদিন আগে হৃদয় জুয়েলকে জানায় একজনকে মারতে হবে। তাই কিছু লোক ঠিক করে দিতে হবে। জুয়েল নিজেই পারবে বলে কাজটি নিজে নিয়ে নেন। ঘটনার আগের দিন হৃদয় ও রিফাত ঢাকা গিয়ে মামুন মাহমুদকে হত্যা করতে জুয়েলকে নির্দেশ দেয়। জুয়েল মামুন মাহমুদকে চেনে না জানালে হৃদয় ও রিফাত জানায় সাগর সিদ্দিকী তাকে মামুনের অফিস ও ছবি দেখিয়ে দেবে। পরে তাকে মামুন মাহমুদের অফিস ও ছবি দেখিয়ে দেয় সাগর সিদ্দিকী।
এদিকে অভিযানের খবর টের পেয়ে আগেই সটকে পড়েন গিয়াসউদ্দিন ও তার ছেলে রিফাত।
জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবি জানান, এটি লজ্জাজনক ঘটনা। যেহেতু মামলা হয়েছে ও তদন্তনাধীন বিষয় তাই আমি এ ব্যাপারে কিছু বলতে পারবো না।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান জানান, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে পল্টন থানা পুলিশ ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ গিয়াসউদ্দিনের বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে। তবে বাড়িতে এ সময় তাদের পাওয়া যায়নি।
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ