রাজশাহীতে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতার উপর হামলার অভিযোগে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে পুঠিয়া উপজেলার বেলপুকুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ওই যুবলীগ নেতার নাম সুমনুজ্জামান সুমন। তিনি পুঠিয়া উপজেলার বেলপুকুরিয়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান বদিউজ্জামানের ছেলে।
আর হামলার শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মাজেদুর রহমান। গত রবিবার রাতে তিনি ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১০ জনের নামে মামলা করেছেন। এতে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। বাকিদের অজ্ঞাত রাখা হয়েছে। যুবলীগ নেতা সুমন এই ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত।
এর আগে গত রবিবার রাত ৯টার দিকে পুঠিয়া উপজেলার বেলপুকুরিয়া ইউনিয়নের বেলপুকুর বাজারে মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে হামলায় ছাত্রলীগ নেতা মাজেদুর আহত হয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। তার মাথায় ১৩টি ও গালে দুইটি সেলাই পড়েছে।
মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ জানুয়ারি বেলপুকুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পান পুঠিয়া উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি রাজিবুল ইসলাম। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন বদিউজ্জামান বদি। ওই নির্বাচনে মাজেদুর রহমান নৌকার পক্ষ হয়ে কাজ করেন।
এরপর থেকে এলাকায় বর্তমান চেয়ারম্যানের ছেলে ও পুঠিয়া যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সুমনুজ্জামানের মধ্য দ্বন্দ্ব চলছিল। এ নিয়ে উভয় পক্ষ ফেসবুকে একে অপরকে নিয়ে লেখালেখি করে আসছিল। গত রবিবারের একটি ফেসবুক পোস্টের বিষয় নিয়ে মাজেদুর রহমানের সঙ্গে সুমনুজ্জামান ফোনে কথা বলেন। পরে এ বিষয়ে তাদের একাধিকবার তর্কাতর্কি হয় ফোনে। পরে রাতে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। এতে মাজেদুর জখম হন।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন এলাকার বেলপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, রাতেই মামলা নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে মামলার প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও অন্য অভিযুক্তদের দ্রুতই গ্রেফতার করা হবে।
এদিকে মঙ্গলবার বিকাল ৫টার দিকে উপজেলার বেলপুকুর বাজারে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সমাবেশে সঞ্চালনা করেন উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলে রাব্বি মুরাদ। সভাপতিত্ব করেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হবিবুর রহমান। এতে বক্তব্য দেন উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি রাজিবুল ইসলাম, জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি মহিবুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক মনজুর রহমান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল, সৈনিক লীগের সভাপতি আয়েস উদ্দিন প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মাজেদুর রহমানের উপর ন্যক্কারজনক হামলা চালানো হয়েছে। এই হামলার সঙ্গে জড়িতদের সবাইকে গ্রেফতার করতে হবে। এছাড়াও বর্তমান চেয়ারম্যান নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হয়েছেন। তার সঙ্গে স্থানীয় এমপির সখ্যতা রয়েছে। আওয়ামী লীগ এই নীতিতে বিশ্বাসী নয়।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর