খুলনায় প্রায় আঠারো বছর পর রূপসা খেয়াঘাটের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেয়েছে জেলা পরিষদ। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের এক দাপ্তরিক চিঠিতে এখন থেকে রূপসা ঘাটসহ বিবাদমান সাতটি খেয়াঘাটের পরিচালনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে জেলা পরিষদকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১২ এপ্রিল) ওইসব ঘাটের ইজারা কার্যক্রম শুরু ও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশিত চিঠি পৌঁছে দিয়েছে জেলা পরিষদ। এতে খেয়াঘাট নিয়ে কেসিসি-জেলা পরিষদের দ্বৈত প্রশাসন দ্বন্দ্বের অবসান হলো।
খেয়াঘাটগুলো হচ্ছে- রূপসা খেয়াঘাট, কাষ্টমঘাট, জেলখানাঘাট, দৌলতপুর বাজার খেয়াঘাট, বার্মাশীল, নগরঘাট/ রেলিগেটঘাট ও স্টিমারঘাট।
জানা যায়, ২০০৫ সালে খুলনার লবনচরায় খানজাহান আলী (রহ.) সেতু চালু হওয়ার পর পূর্ব-পশ্চিম রূপসা ঘাটে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু প্রতিদিন এই স্থানে হাজার হাজার মানুষ নদী পারাপার করায় সেখানে চালু হয় রূপসা খেয়াঘাট।
জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এমএম মাহমুদুর রহমান বলেন, প্রায় ৫০ বছর ধরে খুলনার ঘাট জেলা পরিষদের দায়িত্বে থাকলেও ফেরি চলাচলের কারণে বিআইডব্লিউটিএ ওই ঘাটের নিয়ন্ত্রণ নেয়। কিন্তু সুষ্ঠুভাবে ঘাট পরিচালনায় ব্যর্থ হলে ঘাটটি ফিরে পেতে বিআইডব্লিউটিএ’র বিরুদ্ধে জেলা পরিষদ মামলা করে। ওই মামলা চলমান অবস্থায় ২০০৫ সালে হঠাৎ করেই রূপসা খেয়াঘাটের ইজারার দায়িত্ব নেয় সিটি করপোরেশন। ২০১৮ সালে হাইকোর্ট বিভাগ সিভিল রিভিশন নং-৪৫৭/২০১৬ এর আদেশে রুল নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত খেয়াঘাটের পরিচালনায় জেলা পরিষদের পক্ষে স্থগিতাদেশ দেয়। এরপর ঘাটটি ফিরে পেতে কেসিসি-জেলা পরিষদ কয়েকদফা বৈঠক হলেও সমাধান হয়নি।
চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি জেলা পরিষদ রূপসা ঘাটসহ ১৬টি খেয়াঘাটে ইজারা দিতে দরপত্র ঘোষণা করে। কিন্তু কেসিসি গত ৫ মার্চ রূপসাসহ সাতটি খেয়াঘাটে ইজারা দিতে পাল্টা দরপত্র দিলে পরিস্থিতি উত্ত্যপ্ত হয়। অচলাবস্থা নিরসনে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত চিঠির পর সাতটি ঘাটের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেয়েছে জেলা পরিষদ।
স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব (জেলা পরিষদ) মোহাম্মদ সামছুল হক সাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়- ‘২০১৮ সালের ৬ আগষ্ট হাইকোর্টের আদেশে আদালত কর্তৃক পূর্বে প্রদত্ত স্থগিতাদেশের মেয়াদ রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বাড়ানো হয়। যেহেতু জেলা পরিষদের খেয়াঘাট বিষয়কে কেন্দ্র করে হাইকোর্ট বিভাগের আদেশ রয়েছে, এ অবস্থায় জেলা পরিষদকে খেয়াঘাট বিষয়ে আদালতের আদেশ অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।’
বিডি প্রতিদিন/হিমেল