বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে লঞ্চ চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছে। এ বিষয়ে নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগ বিআইডব্লিউটিএ এর যুগ্ম পরিচালক মো. কবির হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ের কারণে আবহাওয়া অধিদপ্তর ঢাকা বিভাগের ২ নম্বর সতর্ক সংকেত দিয়েছে।
আর ২ নম্বর সতর্ক সংকেত থাকলে কোনো নৌ-যান চলাচল করতে দেওয়া যায় না। এজন্য আমরা সাময়িক সময়ের জন্য সদরঘাট থেকে কোনো নৌ-যান ছাড়ছি না। তিনি বলেন, আমরা আবহাওয়া অধিদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আমরা আবার লঞ্চ ছাড়ার অনুমতি দেবো। এ দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা দিতেই এ উদ্যোগ। এজন্য যাত্রী সাধারণকে ধর্য ধরে অপেক্ষা করার অনুরোধ করেন। একই সঙ্গে পরিস্থিতি ভালো হলে লঞ্চ ছাড়ার অনুমতি দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে শনিবার (২২ এপ্রিল) দেশে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে বাস ও ট্রেনের মতো লঞ্চেও রাজধানী ছাড়ছেন বিপুল সংখ্যক মানুষ। শুক্রবার (২১ এপ্রিল) সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, টার্মিনালে হাজার হাজার যাত্রী নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে প্রায় ৩০টির মতো লঞ্চ। আবহাওয়া ও বিআইডব্লিউটিএ এর অফিসের অনুমতি পেলেই তারা নিদিষ্ট গন্তব্যের উদ্দেশ্যে সদরঘাট থেকে ছেড়ে যাবে।
এদিকে নৌপুলিশ বার বার মাইকিং করে লঞ্চ না ছাড়ার জন্য বলছে। এরমধ্যে লঞ্চের যাত্রীদের মধ্যে চাপা উৎকণ্ঠা লক্ষ্য করা গেছে। এবিষয়ে এমভি ফারহান-৬ লঞ্চের যাত্রী রাকিব উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, পরিবারের সঙ্গে ঈদ করবো সে জন্য বাড়ি যাচ্ছি। হঠাৎ আবহাওয়া খারাপ হওয়াতে লঞ্চ সাড়ে ৫টায় লঞ্চ ছাড়ার কথা থাকলেও এখনো ছাড়ছে না। কখন ছাড়বে তাও জানি না। এজন্য টেনশন হচ্ছে সঠিক সময়ে বাড়ি যেতে পারবো কিনা।
এমভি ফারহান -৬ লঞ্চের কেরাণী মো. সোহেল গণমাধ্যমকে বলেন, ঝড়ের কারণে আমাদের লঞ্চ ছাড়তে দিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। আমাদের নির্দেশ দিলেই ছেড়ে দেবো। যাত্রীরা ধর্য হারা হয়ে যাচ্ছে। কি করবো বলেন। সবাই ঈদের জন্য উৎসুক হয়ে আছেন।
বার্থদিং সারেং মো. মামুন গণমাধ্যমকে বলেন, আজকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত সদরঘাট টার্মিনাল থেকে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে ৯০টি লঞ্চ ছেড়ে গেছে। এরপর ঝড় শুরু হওয়ায় আপাতত লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত লঞ্চ ছাড়তে দেওয়া হবে না। সরদরঘাট থেকে চাঁদপুর, বরিশাল, লালমোহন, বেতুয়া, মৃদ্ধারহাট, মুলাদি, বরগুনা, ভোলা, শৈলা ও শরীয়তপুরসহ ৪৩টি রুটে লঞ্চ ছেড়ে গেছে। বুধবার ১০৭ টি লঞ্চ এবং বৃহস্পতিবার ১৪৪টি লঞ্চ সদরঘাট থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে গেছে বলেও জানান তিনি।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক