ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা বার্তা ছড়িয়ে দিতে শিক্ষকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
আজ শনিবার বিকালে রাজধানীতে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে ডিএনসিসি আওতাধীন এলাকার সব স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষকের সাথে মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তৃতায় তিনি এ অনুরোধ জানান।
লালমাটিয়া সরকারি মহিলা কলেজের অডিটোরিয়ামে এই মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
সভাপতির বক্তৃতায় ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘শিক্ষকরাই শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে কোনো বার্তা ছড়িয়ে দিতে পারেন। বাবা-মায়ের পর শিক্ষকরাই শিশুদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষকরা সুন্দর সুস্থ সমাজ গঠনের কারিগর। আমি শিক্ষকদের অনুরোধ করছি আজ থেকেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা বার্তা ছড়িয়ে দিন। সুস্থতার জন্য সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।’
এসময় ডিএনসিসি মেয়র এডিসের প্রজননক্ষেত্র গাড়ীর পরিত্যক্ত টায়ার, ডাবের খোসা, মাটির পাত্র, খাবারের প্যাকেট, অব্যবহৃত কমোড এগুলো দেখিয়ে উপস্থিত শিক্ষকদের সচেতন করেন।
মেয়র বলেন, ‘কী কী কারণে এডিস মশা জন্মায় সে বিষয়গুলো শিশুদের জানাতে হবে। এডিস মশার ভয়াবহতা সম্পর্কে শিশুদের জানাতে হবে। আমরা বিদেশে দেখেছি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের, প্রাইমারি স্কুলের শিশুদের এডিস মশা নিধনে সচেতনতা শিক্ষা দেওয়া হয়। কারণ, শিশুরাই বাসা বাড়িতে গিয়ে এটি এপ্লাই করবে। তারা বাবা-মা, দাদা-দাদি, নানা-নানিদের জানাবে বাসা বাড়ি পরিষ্কার রাখতে হবে, কোনোভাবেই পানি জমতে দেওয়া যাবে না। তারা সবাইকে জানাবে কীভাবে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিদেশের আদলে আমরা ইতোমধ্যে এডিস নিয়ন্ত্রণে করণীয় বিষয়ে কার্টুন বই তৈরি করে ফেলেছি। বিদেশে দেখেছি শিশুরা কার্টুন একে, রং করে এডিস মশা সম্পর্কে, লার্ভা কীভাবে জন্মায় সে সম্পর্কে শিখতে পারে। আমরা ডিএনসিসি এলাকার স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণের জন্য এক লাখ বই ছাপানোর পরিকল্পনা নিয়েছি। তবে দেশের সকল শিক্ষার্থীদের জন্য জাতীয়ভাবে পাঠ্যপুস্তকে যদি এই বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয় তাহলে এই শিক্ষাটা ছড়িয়ে যাবে সমগ্র দেশে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।’
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সবাইকে সচেতন হতে হবে উল্লেখ করে মেয়র বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমে আজ বৃষ্টি, কাল রোদ। এমন রোদ বৃষ্টির ফলে এডিসের লার্ভা বেশি জন্মায়। কোনোভাবেই পানি জমতে দেওয়া যাবে না। কাউন্সিলর, কর্মকর্তা, মশক কর্মী সবাই মাঠে কাজ করছে। কিন্তু আপনাদের নিজেদের ঘরে, বাড়ির ছাদে পানি জমিয়ে রাখলে সেটির দায় আপনাদের নিতে হবে। যারা ছাদে অব্যবহৃত কমোড, পাত্র, রঙের কৌটা, টায়ার এগুলো রেখে দিলে সেই দায় বাড়ির মালিক, অফিসের মালিক, স্কুল, কলেজ, মাদরাসার কর্তৃপক্ষের নিতে হবে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের জন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে।’
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ