গাজীপুরে বাড়ি ফেরার পথে এক স্কুলছাত্রী ও তার নানির গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুনে ঝলসে দেওয়ার ঘটনায় ওই ছাত্রীর সৎ ভগ্নিপতিকে ময়মনসিংহ থেকে গ্রেফতার করেছে জয়দেবপুর থানা পুলিশ। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর সৎ মা, ভাই, ভগ্নিপতি ও সৎ নানিকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন দগ্ধ ছাত্রীর বাবা। সোমবার সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জয়দেবপুর থানার ওসি মাহাতাব উদ্দিন।
গ্রেফতারকৃতের নাম-মো: সাব্বির আহম্মেদ (২৭)। সে ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা থানার স্কয়ার মাস্টারবাড়ী এলাকার মৃত গোলাম মোস্তফা রাজার ছেলে।
এলাকাবাসী ও দগ্ধদের স্বজনরা জানান, গাজীপুর সদর উপজেলার শিরিরচালা এলাকার সানজিদা আক্তারের মা মারা যাওয়ার পর তার বাবা শফিকুল ইসলাম তিন সন্তানের জননী মনিরা বেগমকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সানজিদা আক্তার আয়েশা (১৩) স্থানীয় হাজী নুরুল ইসলাম মডেল একাডেমী সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী। গত কয়েকদিন আগে মনিরা বেগমের প্রথম পক্ষের সন্তান মো: শুভ মিয়া (২০) এক মেয়েকে নিয়ে মো: শফিকুল ইসলামের বাড়িতে আসে। সানজিদা এ ঘটনা তার বাবাকে জানালে তিনি শুভকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয় শুভ। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে শফিকুল ইসলামের বাড়ি ছেড়ে চলে যান তার দ্বিতীয় স্ত্রী মনিরা বেগম (শুভ’র মা)। পরবর্তীতে শফিকুল ইসলাম তার সন্তানদের দেখাশুনার জন্য তার প্রথম পক্ষের শাশুড়ি বেবী বেগমকে বাড়িতে নিয়ে আসেন।
তারা আরো জানান, রবিবার দুপুরে স্কুল থেকে নাতনি সানজিদাকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন বেবী বেগম। পথে একটি কাঁঠাল বাগানের পাশে পৌঁছাতেই মনিরা বেগমের প্রথম পক্ষের বখাটে ছেলে শুভ মিয়া ও জামাতা সাব্বির আহম্মেদ মোটরসাইকেলযোগে এসে তাদের পথরোধ করে। এসময় তারা সানজিদা ও তার নানি বেবী বেগমের শরীরে দাহ্য পদার্থ পেট্রোল/অকটেন ঢেলে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে প্রথমে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও পরে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে ভর্তি করেন।
জয়দেবপুর থানার ওসি মাহাতাব উদ্দিন জানান, এঘটনায় রাতে সানজিদার বাবা শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে জয়দেবপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় মনিরা বেগম (৪২), মনিরার মা এবং তার (মনিরার) প্রথম পক্ষের ছেলে শুভ মিয়া ও জামাতা সাব্বির আহম্মেদকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ সোমবার ভোররাতে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ময়মনসিংহ থেকে সাব্বিরকে গ্রেফতার করে। অন্য আসামিদেরকের গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল