সারাদেশের মতো রাজধানী ঢাকার সড়কেও এখন আর ট্রাফিক পুলিশ নেই। মোড়ে মোড়ে পুলিশের অনুপস্থিতিতে কোথায় কোন যানজট নেই। পতাকা-বাশিঁ হাতে মোড়ে মোড়ে পুরান ঢাকার ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছেন স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের সহায়তা করছেন বিএনসিসির সদস্যরাও। শুক্রবার (০৯ আগস্ট) পুরান ঢাকার বিভিন্ন সড়ক ঘুরে চিত্র দেখা যায়।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়- শিক্ষার্থীরা পুরান ঢাকার বাংলাবাজার, সদরঘাট, লক্ষীবাজার, শাঁখারি বাজার, ভিক্টোরিয়া পার্ক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, রায়সাহেব বাজার, তাতিঁবাজার, নয়াবাজার মোড়সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ট্রাফিক পুলিশের অনুপস্থিতিতে রাস্তায় যানবাহনের শৃঙ্খলা ফেরাতে রোদ-বৃষ্টির মধ্যে অবিরত কাজ করে যাচ্ছেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা রক্তের বিনিময়ে নতুন করে বাংলাদেশ পেয়েছি। এই দেশের সকল রাষ্ট্রীয় সম্পদ, জনগনের জানমালের নিরাপত্তাসহ সড়কে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছি। আমাদের পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকলেও সকলে মিলে কাজ করছি যানজট নিরসনে।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, এই ক্ষেত্রে বাসগুলোকে আমরা নির্দিষ্ট স্থান ছাড়া অন্য কোথাও থামতে দিচ্ছি না। জনসাধারণকে সচেতন করছি ট্রাফিক আইন মেনে চলে যানজট মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে। আমরা অ্যাম্বুলেন্স, জরুরি পণ্য সরবরাহকারী যানবাহন সমূহকে আগে যেতে দিচ্ছি। সাধারণ মানুষও আমাদের সহযোগিতা করছে।
এছাড়া সড়কের যানবাহনের চাপ সামলাতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সহযোগিতা করছেন স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনসিসি, রোভার স্কাউটসসহ বেশকিছু স্বেচ্ছাসেবী গঠনের সদস্যরা। এসময় তাদের জাতীয় পতাকা, বাশিঁ, হ্যান্ড মাইক হাতে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়।
এদিকে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় ছেলে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি নারী শিক্ষার্থীর উপস্থিতি দিন দিন বেড়ে চলছে সড়কের যানজট নিরসনে। এর ফলে তাদের প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন অভিভাবক থেকে শুরু করে ছাত্র-জনতা সকলে।
শিক্ষার্থীদের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে সাধারণ মানুষ বলেছেন, আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে শিক্ষার্থীদের হাতে ধরে এগিয়ে যাবে দেশ। শিক্ষার্থীদের এ ত্যাগ ও অবদানের কথা ইতিহাসের স্বাক্ষী হয়ে থাকবে। আমাদের এই প্রজন্মের তরুণরা দেখিয়ে দিয়েছে কিভাবে একটি দেশকে পরিচালিত করতে হবে। পুলিশ এবং এদেশের রাজনৈতিক দলের উচিত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ