২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদসহ সব আসামিকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।
রবিবার বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ আসামিদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদন (ডেথ রেফারেন্স) ও আপিল আবেদনের ওপর শুনানি শেষে বিচারিক আদালতের রায় বাতিল করে এ আদেশ দেন।
রায়ের খবর শুনে কুমিল্লার মুরাদনগরে দলটির ভাইস চেয়ারম্যান কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদের এলাকায় মুহূর্তেই হাজার হাজার মানুষ আনন্দ মিছিল নিয়ে মুরাদনগর সদরে আসেন। বিএনপি নেতাকর্মীদের পাশাপাশি হাজার হাজার সাধারণ মানুষও আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠেন। মুরাদনগরের প্রতিটি গ্রামগঞ্জে মিষ্টি বিতরণ করেন আপামর জনতা।
এছাড়াও বিকাল ৪টায় মুরাদনগর ডি আর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শোকরানা ও দোয়ার আয়োজন করা হয়।এসময় উপজেলার সর্বস্তরের সাধারণ উপস্থিত ছিলেন। দীর্ঘদিন পর এই মামলা খালাস পাওয়ায় সনাতন ধর্মাবলম্বীরাও তাদের মন্দিরে প্রার্থনার আয়োজন করে। পূজা উৎসবের মত আজ তারা উন্নতমানের খাবার আয়োজন করেছে।
মুরাদনগর সদরসহ পুরো উপজেলায় আনন্দে মেতেছে লাখ লাখ মানুষ। এদিকে নেতাকর্মীরা দাবি জানান, যারা কায়কোবাদকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেশান্তরিত করেছে তাদেরকে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
সাবেক মন্ত্রী কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের ছোট ভাই কাজী জুননুন বসরী বলেন, হামলা মামলা জুলুম নির্যাতনের পরেও এ মুরাদনগরের মানুষ যেভাবে আমার বড় ভাইয়ের পাশে ছিলেন আমরাও আপনাদের পাশে ছিলাম আছি আজীবন থাকবো ইনশাআল্লাহ। আমার দাদাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে আজ ১৩ বছর পরিবার ও মুরাদনগরের মানুষ থেকে দূরে রেখেছে। তারা ভেবেছে মুরাদনগর থেকে কায়কোবাদকে মুছে দেবে! কিন্তু রায় ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে হাজার হাজার মানুষ যেভাবে আনন্দ মিছিল নিয়ে লক্ষাধিক মানুষের সমাবেশে পরিণত করেছে তাতে আজ প্রমাণিত হয়েছে মুরাদনগরে কায়কোবাদ দাদার বিকল্প নাই।
উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল উদ্দিন ভুইয়া বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকার ও তার দোসর ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন মিথ্যা সাজানো মামলায় জড়িয়ে মুরাদনগরের আপামার জনতার হৃদয়ের মনি কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদকে ১৩ বছর মুরাদনগরের মানুষ থেকে দূরে রেখেছে। আজ জনতার বিজয় হয়েছে। আমার নেতা খালাস পেয়েছে। আমাদের নেতাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে যারা দূরে রাখল তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক সরকার মজিব বলেন, ৫ আগস্ট দেশ স্বাধীন হলেও আমাদের মনের ব্যথা যায়নি। আজ এ রায়ের মাধ্যমে আমরা পূর্ণ স্বাধীনতা পেলাম। আজ আমরা ৫ আগস্টের চেয়েও বেশি আনন্দিত।
হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের মুরাদনগর উপজেলা সেক্রেটারি অরুপ নারায়ন পৌদ্দার পিংকু বলেন, মুরাদনগরের সকল হিন্দুরা মিলে আমরা মানববন্ধন করেছিলাম অবিলম্বে কায়কোবাদ দাদার মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে। ভগবান আমাদের প্রার্থনা মঞ্জুর করেছে। আজ দাদা মিথ্যা মামলা থেকে মুক্তি পেয়েছে। আমরা হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা আজ মন্দিরে আনন্দ উদযাপন ও ভুড়িভোজ করছি।
আনন্দ মিছিল মিষ্টি বিতরণ ও দোয়ার আয়োজনকে ঘিরে লাখ লাখ মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে মুরাদনগর উপজেলা সদর।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত