বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটানোই আমাদের মূল দাবি হওয়া উচিত।
শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি, দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীমসহ রাজবন্দীদের মুক্তির দাবি এবং ডা. রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে এক পেশাজীবী সমাবেশে তিনি এই মন্তব্য করেন। বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যোগে পরিষদের আহ্বায়ক ডা. এ জেডএম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব কাদের গনি চৌধুরীর পরিচালনায় এই সমাবেশ হয়
দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, এখন আমাদের মুখ্য দাবি হওয়া দরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা থেকে এই সরকারকে প্রত্যাহার করতে হবে, এই সরকারকে সরাতে হবে। জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করে সুষ্ঠু ও অবাধ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মধ্যদিয়ে দেশে একটি জনগণের সরকার নির্বাচন করা এখন অপরিহার্য।চলমান গণতান্ত্রিক যুদ্ধে সবাইকে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে গয়েশ্বর বলেন, দেশের কথা চিন্তা করেন, ১৯৭১ সালের মতো গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে অবস্থানকারীদের রুখে দাঁড়ান। ১৯৭১ সালে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের স্বপ্ন নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছি; সেই গণতন্ত্রের জন্য আমরা যুদ্ধ করছি। এই যুদ্ধে অংশগ্রহন করবেন, নাকি বিরোধীতা করবেন? করলে ভালো, না করলে ১৯৭১ সালের মতো রাজকারের খাতায় নাম লেখাবেন।
১৯৭১ সালে শান্তি কমিটি গঠন করা হয়েছিল উল্লেখ করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, এখন আওয়ামী লীগও আরেকটি শান্তি কমিটি করছে। যেদিন আমরা কর্মসূচি করি, সেদিন এই শান্তি কমিটিও কর্মসূচি দেয়। আমার মনে হয় ওবায়দুল কাদের তার পারিবারিক সূত্রের অভিজ্ঞতা পাওয়া।
হুঁশিয়ারি দিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, কোনো কমিটি এই সরকারকে রক্ষা করতে পারবে না। এই কর্মসূচিতে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় সাংবাদিক সাগর-রুনি হত্যা এবং বিডিআর বিদ্রোহে নিহত ৫৭ সেনা কর্মকর্তা হত্যা প্রসঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, এই সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত সাগর-রুনির হত্যার প্রকৃত বিচার পাওয়া যাবে না। পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছে। যা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধেও এতো সেনাকর্মকর্তা শহীদ হননি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার দেশপ্রেমিক নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, আজকে সবাইকে বুঝতে হবে,এই সরকার জাতীয়তাবাদী নয়, দেশপ্রেমিক নয় এবং গণতান্ত্রিক নয়। যার কারণে জনগনের কথা তোয়াক্কা করে না।
বৃহস্পতিবার গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ঢাকা বিভাগের বিএনপি সমর্থিত ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক এবং বর্তমান জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার মতবিনিময় সভা করে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ নীতিনির্ধারকরা।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, একজন চেয়ারম্যান উক্তি করেছেন, জনগণ থাকবেন নিরাপদে ঘরে, ভোট দেবে প্রশাসন, সন্ধ্যায় ফল গণনা করবে নির্বাচন কমিশন। অর্থাৎ জনগণ ভোট কেন্দ্রে যেতে পারবেন না, ২০১৮ সালের নির্বাচন দেখেছেন, কারা ভোট দিয়েছে? প্রশাসন। প্রশাসন বলতে বুঝায় ডিসি-এসপি পুলিশ ইত্যাদি। কে কত ভোট দিতে পারে। কারণ, ভয়, না হয় চাকরি যায়। দেশটা আমার একার নয়, আপনারও। যারা পুলিশে চাকরি করেন, পুলিশে আজীবন চাকরি করবেন না।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল