মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

এখনো রহস্যঘেরা তনু হত্যা

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার আকুতি মায়ের

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজছাত্রী সোহাগী জাহান তনু হত্যার তিন বছর আগামীকাল ২০ মার্চ। দীর্ঘ সময়েও তনুর হত্যাকারীরা শনাক্ত হয়নি, নেই মামলার উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি। মামলার তদন্তকারী সংস্থা দীর্ঘ প্রায় তিন বছর জিজ্ঞাসাবাদেই ব্যস্ত রয়েছেন। তনুর খুনি চিহ্নিত না হওয়ায় ক্ষুব্ধ তনুর পরিবার এবং কুমিল্লার বিশিষ্টজনরা। এদিকে তনুর মা আনোয়ারা বেগমের আকুতি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার। তার বিশ্বাস প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করলে তিনি   মেয়ে হত্যার বিচার পাবেন। তিনি তনুর কাপড়ের ঘ্রাণ নিয়ে মেয়ের অভাব পূরণ করেন বলেও জানান। তনুর পরিবার সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের ২০ মার্চ সন্ধ্যায় কুমিল্লা সেনানিবাসের ভিতরে একটি বাসায় টিউশনি করতে গিয়ে আর বাসায় ফেরেনি তনু। পরে স্বজনরা খোঁজাখুঁজি করে রাতে সেনানিবাসের ভিতর বাসার অদূরে একটি জঙ্গলে তনুর মরদেহ পায়। পরদিন তার বাবা কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহায়ক ইয়ার হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশ ও ডিবির পর ২০১৬ সালের পয়লা এপ্রিল থেকে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি কুমিল্লা। তনুর দুই দফা ময়নাতদন্তে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ মৃত্যুর সুস্পষ্ট কারণ উল্লেখ করেনি। শেষ ভরসা ছিল ডিএনএ রিপোর্ট। ২০১৭ সালের মে মাসে সিআইডি তনুর জামা-কাপড় থেকে নেওয়া নমুনার ডিএনএ পরীক্ষা করে তিনজন পুরুষের শুক্রাণু পাওয়ার কথা গণমাধ্যমকে জানিয়েছিল। পরে সন্দেহভাজনদের ডিএনএ ম্যাচিং করার কথা থাকলেও তা করা হয়েছে কিনা- সিআইডি বিস্তারিত কিছু বলছে না।

সর্বশেষ তিনজনকে ২০১৭ সালের ২৫ অক্টোবর থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত সিআইডির একটি দল ঢাকা সেনানিবাসে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদ করা ব্যক্তিরা তনুর মায়ের সন্দেহ করা আসামি বলেও সিআইডি জানায়। গণজাগরণ মঞ্চ- কুমিল্লার মুখপাত্র খায়রুল আনাম রায়হান বলেন, তনু হত্যা মামলাটির তদন্তে সিআইডি ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। যা খুবই দুঃখজনক। হত্যাকান্ডের দ্রুত বিচারের দাবিতে আগামীকাল ২০ মার্চ বিকালে কুমিল্লা কান্দিরপাড় পূবালী চত্বরে আমরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করব। তনুর মা আনোয়ারা বেগম বলেন, তনুর বাবা এবং আমি খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছি। মৃত্যুর আগে মেয়ের হত্যাকান্ডের বিচার দেখে যেতে চাই। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মেয়ের হত্যার বিচার চাওয়ার সুযোগ পেলে অন্তরে শান্তি পেতাম। প্রায় এক বছর ধরে সিআইডির সঙ্গে আমাদের কোনো যোগাযোগ নেই। অফিসে গিয়ে তদন্ত কর্মকর্তাকেও পাওয়া যাচ্ছে না।

তনুর মা আরও বলেন, সার্জেন্ট জাহিদ ও তার স্ত্রীকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যাকারী কে বেরিয়ে আসবে। কারণ সার্জেন্ট জাহিদের বাসায় টিউশনি করতে যাওয়ার পর জঙ্গলে তনুর মরদেহ পাওয়া যায়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিআইডি কুমিল্লার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জালাল উদ্দীন আহমেদ বলেন, আমাদের কাজে কোনো স্থবিরতা নেই, আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ডিএনএ পরীক্ষা এবং ম্যাচিং করার বিষয়টি সময় সাপেক্ষ। ডিএনএ ম্যাচিংয়ের কাজ চলছে। মামলার প্রয়োজনে আমরা বিভিন্নজনকে জিজ্ঞাসাবাদও করছি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর