শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

ইলেকট্রনিক্স সিটিতে কর্মসংস্থানের হাতছানি

ডিসেম্বরে শেষ হচ্ছে কাজ, চাকরি পাবেন ৫০ হাজার মানুষ

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

ইলেকট্রনিক্স সিটিতে কর্মসংস্থানের হাতছানি

দীর্ঘ অপেক্ষার পর সম্ভাবনার দ্বার খুলতে যাচ্ছে সিলেট ইলেকট্রনিক্স সিটির। অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজ শেষ করে আগামী ডিসেম্বরেই উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হচ্ছে প্রযুক্তিনির্ভর এই মেগা প্রকল্পটি। সম্ভাবনাময় এ প্রকল্পে দেশি উদ্যোক্তার পাশাপাশি বিদেশি উদ্যোক্তারাও বিনিয়োগে আগ্রহী হবেন বলে বিশ্বাস ব্যবসায়ী নেতাদের। এ ছাড়া প্রকল্পটিতে দক্ষ ও অদক্ষ মিলে অন্তত ৫০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে বলেও আশা প্রকাশ করছেন প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা।

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বর্ণি এলাকায় ১৬৭ একর জমির ওপর গড়ে উঠছে দেশের অন্যতম বৃহৎ ‘ইলেকট্রনিক্স সিটি’ বা ‘হাই টেক পার্ক’। এ প্রকল্পে ওয়ানস্টপ সার্ভিসের আওতায় উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া হবে। প্রকল্পটিতে উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগে আগ্রহী করে তুলতে ১১ এপ্রিল সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ ও বাংলাদশে হাই টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের যৌথ উদ্যোগে এক কর্মশালার আয়োজন করা হয়। কর্মশালায় দেশি-প্রবাসী বেশ কয়েকজন উদ্যোক্তা প্রকল্পটিতে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেন।

জানা গেছে, ‘সিলেট ইলেকট্রনিক্স সিটি’র অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রায় শেষ পর্যায়ে। প্রকল্পের সাইট অফিস, প্রশাসনিক ভবন, দৃষ্টিনন্দন আইসিটি বিজনেস সেন্টার, শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের কাজ শেষের পথে। ইতিমধ্যে মাটি ভরাট, দৃষ্টিনন্দন ব্রিজ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কাজ সম্পন্ন হয়ে গেছে। বিদ্যুতের সাবস্টেশন স্থাপন ও গ্যাস সংযোগের কাজও চলছে দ্রুতগতিতে।

প্রকল্পটির পরিচালক ব্যারিস্টার মো. গোলাম সরওয়ার ভূঁইয়া জানান, সিলেট ইলেকট্রনিক্স সিটির প্রতিটি প্লট ৪০ বছরের জন্য বন্দোবস্ত দেওয়া হবে। প্রতি বর্গমিটার ভূমির বার্ষিক ভাড়া হবে ১ দশমিক ৫ ডলার। প্রকল্পটিতে উদ্যোক্তাদের আগ্রহী করতে বিনিয়োগকারীদের দেওয়া হবে ট্যাক্স হলিডেসহ বিনিয়োগবান্ধব নানা সুবিধা। সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগেও বিনিয়োগের সুবিধা থাকবে প্রকল্পটিতে।

তিনি জানান, ইলেকট্রনিক্স সিটিতে বিনিয়োগ বা প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য উদ্যোক্তাদের ফাইল নিয়ে অফিসে অফিসে দৌড়াতে হবে না। ওয়ানস্টপ সার্ভিসের মাধ্যমে তাদের ১৪৮টি সেবা এক জায়গা থেকে দেওয়া হবে। প্রকল্পসূত্র আরও জানান, ইলেকট্রনিক্স সিটিতে বিভিন্ন ধরনের হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার, ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী তৈরি করা হবে। এখানে গ্রাফিক্স ডিজাইন,  অ্যানড্রয়েড মোবাইল অপারেশন, জাভা এসই-৮ প্রোগ্রামিং, ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট, নেটওয়ার্ক অ্যান্ড সার্ভার অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, কোর হার্ডওয়ার্ক অ্যান্ড অপারেটিং সিস্টেম, বিপিও, ই-কমার্স, এস কিউ, এল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, ওরাকল ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে। উন্নত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আগামীর প্রযুক্তিবিদও গড়ে তোলা হবে।

এজন্য প্রকল্পে শেখ কামাল আইটি সেন্টারসহ থাকছে দুটি প্রশিক্ষণ সেন্টার। গড়ে ওঠা প্রযুক্তিবিদদের পরে ইলেকট্রনিক্স সিটিসহ দেশের বিভিন্ন পর্যায়ে কাজে লাগানো হবে।

শুধু তাই নয়, দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে বেরোনো শিক্ষার্থীদের ইলেকট্রনিক্স সিটিতে কাজে লাগানোর চিন্তা রয়েছে সংশ্লিষ্টদের। এ ব্যাপারে সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি খন্দকার সিপার আহমদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের অংশ হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে সুবিশাল ইলেকট্রনিক্স সিটি। এ মেগা প্রকল্পে বিনিয়োগের জন্য সিলেট চেম্বার দেশে-বিদেশে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে শিল্পায়নে পিছিয়ে পড়া সিলেট অনেক এগিয়ে যাবে। এ ছাড়া বিপুলসংখ্যক লোকের কর্মসংস্থানেরও সুযোগ সৃষ্টি হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর