মোবাইল ব্যাংকিং প্রতারক চক্রের হোতাকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। চক্রটি বিকাশ ও রকেটসহ বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংক এজেন্টদের মাধ্যমে গ্রাহকদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করত। এর পর বিকাশ কিংবা রকেট অফিসের নম্বর ক্লোন করে গ্রাহককে ফোন দিত। ফোনে গ্রাহকদের বিভিন্ন কোড ডায়াল করতে বলা হতো অথবা মেসেজ দিয়ে বিভিন্ন লিঙ্ক পাঠাত। গ্রাহকরা সেই কোডে ডায়াল করলেই বা লিঙ্কে ক্লিক করলেই তাদের অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়ে যেত। এভাবে গ্রাহকদের মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিত প্রতারকরা। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর টিকাটুলিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল রকিবুল হাসান। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে মিরপুর-১ এর ১৯ নম্বর রোডের ৩৩ নম্বর বাসায় অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের হোতা সোহেল আহমেদকে (৩৬) গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ সিম কার্ড ও মাল্টি সিম গেটওয়ে ডিভাইসসহ মোবাইলফোন জব্দ করা হয়েছে। একই সঙ্গে তার কাছ থেকে একটি ল্যাপটপ, একটি সিগন্যাল বুস্টার, তিনটি মডেম, বিপুল পরিমাণ সিমকার্ড ও অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সোহেল জানিয়েছেন, ২০১৭ সাল থেকে তিনি এই প্রতারণার সঙ্গে জড়িত। তার চক্রের আরও ৫ জন সদস্য রয়েছে। তদন্তের স্বার্থে সেসব নাম প্রকাশ করেনি র্যাব। শিগগির অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হবে। তবে প্রতারণার মাধ্যমে সোহেল এখন পর্যন্ত বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
লে. কর্নেল রকিবুল হাসান বলেন, কোনো গ্রাহক যদি মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেন করতেন, তাহলে সেই নম্বর ও তথ্য এজেন্টরা চক্রটিকে জানিয়ে দিত। তখন তারা মোবাইল ব্যাংকিং কোম্পানির নম্বর ক্লোন করে কল দিয়ে বলতেন, আমি মোবাইল ব্যাংকিংয়ের অফিস থেকে বলছি। আপনি যে টাকা পাঠিয়েছেন বা এসেছে, সেই টাকা ভুল নম্বরে চলে গেছে। এমন সব ভুয়া কৌশল অবলম্বন করে গ্রাহকদের বিভিন্ন কোড ডায়াল করতে বলত অথবা তারা মেসেজ দিয়ে বিভিন্ন লিঙ্ক পাঠাত। গ্রাহকরা সেই কোড বা লিঙ্কে ক্লিক করলেই প্রতারক চক্র টাকা নিয়ে নিতে পারত। তবে তাদের বেশি টার্গেট থাকত, যারা নিয়মিত মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেন করতেন তারা। এ ছাড়া যারা মাসের একটা নির্দিষ্ট দিনে টাকা পাঠাতেন তাদেরকেও টার্গেটের মধ্যে রাখত।
